Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বেনজীর-আজিজরা অবৈধ ক্ষমতার সিকিউরিটি গার্ড: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ জুন ২০২৪ ১৭:৪৮

ঢাকা: ‘সরকারের অবৈধ ক্ষমতার সিকিউরিটি গার্ড হচ্ছে বেনজীর-আজিজরা’— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানবন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ মানববন্ধন আয়োজন করে।

রিজভী বলেন, ‘আপনার (প্রধানমন্ত্রী) আজকে যে অবৈধ ক্ষমতা, এই ক্ষমতার প্রহরী, সিকিউরিটি গার্ড হচ্ছে বেনজীর-আজিজরা। তারা জনগণের ওপর যে দমননীতি চালিয়েছে, সেটি সর্বজন স্বীকৃত। রাতের অন্ধকারে ২০১৮ সালের নির্বাচন কারা করেছে? এই আজিজ এবং বেনজীরা করেছেন। মানুষ মনে করে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নৈতিকতা একটু উচ্চমানের হয়, তাদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ হয়। কিন্তু এই আজিজের মতো লোক সেনাবাহিনীর প্রধান হন কী করে? এটিই তো বিস্ময়কর ব্যাপার।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের বিষয়ে ঐতিহাসিক মন্তব্যগুলো কী ছিল বেনজীর আহমেদের? কত ধমক, কত হুমকির সুরে তিনি তখন বলেছিলেন- আপনাদেরকে অস্ত্র দেওয়া হয়েছে হা-ডু-ডু খেলার জন্য?’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনার যদি ন্যূনতম মানবতাবোধ থাকতো, দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো সেই দিনই তো আপনি বেনজীর আহমেদকে গ্রেফতার করতেন। উনি প্রকাশ্যে এই দেশের নাগরিক বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদেরকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। আপনি তখন তাকে গ্রেফতার করেননি। কারণ, আপনার অবৈধ ক্ষমতার তারা ছিল রক্ষক। আর এই রক্ষক হতে গিয়ে তারা যে কত ভক্ষণ করেছে সেটি এখন দেখা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন করেছে অনেক স্বাধীনতাযোদ্ধা আমরা তাদেরকে স্মরণ করি। ব্রিটিশ আমলেও নিয়ম ছিল কোনো উচ্চপর্যায়ের সরকারি চাকরি পেতে হলে তার ১৪ পুরুষের মধ্যে কেউ ফৌজদারি আইনে দণ্ডিত আছে কিনা, সেটি দেখা হতো। যদি দেখা হতো ফৌজদারি আইনে কেউ চোর, ডাকাত, তাহলে চাকরি পেতো না যতই ভালো রেজাল্ট করুক। পূর্বপুরুষ যদি চোর-ডাকাত হয়, তাহলে সে চাকরি পাবে না। আর জেনারেল আজিজ তাহলে কী করে চাকরি পেলেন? এটি তো আজকে একটা বড় ধরনের প্রশ্ন জনগণের। আপনি প্রধানমন্ত্রী মনে করেছেন আমার জনগণ লাগবে না, ভোট লাগবে না, নির্বাচন লাগবে না, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথাটা আমি মাটির মধ্যে মিশিয়ে দেব!’

রিজভী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের পরে এই আজিজ বলেছিলেন- স্বাধীনতার পরে নাকি এত সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। অর্থাৎ যে নির্বাচন ২০১৮ সালের নিশিরাতে হয়েছিল, যে নির্বাচনকে দেশের মানুষ ‘মিডনাইট’ নির্বাচন বলে, সেই নির্বাচনকে তিনি তকমা দিলেন স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন। আজিজ-বেনজীররা শেখ হাসিনাকে প্রটেকশন দিয়েছে। আর এখন শেখ হাসিনা তাদের প্রটেকশন দিচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার নিপীড়নের ভয়ে, আপনার গুমের ভয়ে, আপনার বিচারবহির্ভূত হত্যার ভয়ে, আপনার ক্রসফায়ারের ভয়ে গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক দলের কর্মীরা কথা বলতে সাহস পায়নি। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক বলেছেন, আমরা অনেক কিছুই জানতাম। কিন্তু লিখতে সাহস পাইনি। প্রকাশ করতে আমরা ভয় পেয়েছি। কারণ, আমাদের পাশে সরকার থাকে না, সরকার থাকে বেনজীরদের পাশে, সরকার থাকে আজিজদের পাশে।’

রিজভী বলেন, ‘এত বড় একটি ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের ঘর উড়ে গেল, মানুষের চাল উড়ে গেল, সুন্দরবনের হরিণ ভেসে গেল, দেড় লাখ বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গেল। কয়জন মন্ত্রী সেখানে গেছে? বাচাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী এত কথা বলেন। কিন্তু প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, একটি প্রতিবাদ করতে পারেন না।’

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এয়ারপোর্টে সমস্ত বিমান বন্ধ করে দিয়ে তিনি দেখা করতে গেলেন তার গুরুর কাছে। শেখ হাসিনা মনে করেন, তার গুরুর সঙ্গে দেখা করলেই হয়ে যাবে। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের সার্বভৌমত্ব- সবকিছু তিনি বিসর্জন দিয়ে, দুর্বল করে তিনি তাদের কাছে মাথা নিচু করেছেন।’

মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একে

আওয়ামী লীগ আজিজ টপ নিউজ বেনজীর রুহুল কবির রিজভী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর