ঢাকা: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যখন দিল্লি সফর করছেন তখন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ বাংলাদেশিদের পোকামাকড়ের মতো গুলি করে হত্যা করছে।
গতকাল কুমিল্লায় বুডিচং এর জামতলা সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিক আনোয়ার হোসেনকে হত্যা করেছে। আনোয়ার হোসেন নিহতের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন সাইফুল হক।
তিনি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে বিএসএফ বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি করেছে। এটি বাংলাদেশকে দেওয়া বিএসএফ এর ওয়াদার পুরোপুরি বরখেলাপ।’
সোমবার (১০ জুন) এক বিবৃতিতে সাইফুল হক এ সব কথা বলেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ‘গত ৯ মার্চ ঢাকায় বিএসএফ প্রধান আবারও সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ঘোষণা করেন। কিন্তু সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা তারা বন্ধ করেনি। প্রতি সপ্তাহে তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে। এটি বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। ভারতের এ সব তৎপরতা কোনো সৎ প্রতিবেশীর পরিচয় নয়, বরং তাদের বাংলাদেশবিরোধী আগ্রাসী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে বিএসএফ হাতে ৩০ জনের বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। গত ৭ বছরে বিএসএফের গুলি ও অত্যাচারে প্রাণ হারিয়েছেন দুই শতাধিক বাংলাদেশি, আহত হয়েছেন অনেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সীমান্তে লেনদেনে সমস্যা হলেই বিএসএফ মারমুখী হয়ে ওঠে এবং গুলি চালিয়ে বাংলাদেশিদের প্রাণনাশ করে।’
বিবৃতিতে সাইফুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারসমূহের ভারত তোষণ নীতি, বিশেষ করে গত পনের বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ভারত অনুগত পররাষ্ট্র নীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, পানির ন্যায্য অংশীদারিত্ব, বাণিজ্যিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাসহ ভারতে বাংলাদেশবিরোধী বহুমুখী অপতৎপরতা বন্ধ করানো যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখন প্রায় প্রতিদিন ঘোষণা করছে যে, বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব এখন সর্বোচ্চ শিখরে তখন প্রায় প্রতি সপ্তাহে সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ত দিয়ে জ্বর এই বন্ধুত্বের নির্মম দায় শোধ করতে হচ্ছে।’
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সরকার সীমান্তে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড বন্ধ তো দূরের কথা এর উপযুক্ত প্রতিবাদ করার ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছে। সীমান্তবর্তী লাখ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানেও তাদের দৃশ্যমান ও কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেই।’
অনতিবিলম্বে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে সীমান্ত হত্যার শক্ত প্রতিবাদ ও তা বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সাইফুল হক। পাশাপাশি সীমান্ত অঞ্চলের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।