এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নিয়ে উদ্বেগ, সিডিএ ‘নির্বিকার’
১০ জুন ২০২৪ ২৩:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর ওয়াসা মোড় থেকে জিইসির মোড় অভিমুখী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের (বাওয়া) শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে র্যাম্প নির্মাণ না করতে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
বাওয়া স্কুল ও কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আট হাজার। এর আশপাশে আরও তিন-চারটি স্কুল আছে, যেখানে আরও ১০ থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাওয়া স্কুলের সামনে র্যাম্প নির্মাণে দিনরাত কাজ চলছে। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে, বিশেষ করে ছুটির পর যখন সবাই দলবেঁধে বের হন, তখন যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া ‘আক্তারুজ্জামান চৌধুরী উড়াল সড়ক’ নির্মাণের কারণে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কটি সংকুচিত হয়ে সেখানে এমনিতেই সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের কারণে যানজট আরও বাড়বে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৬২ সাল থেকে নারী শিক্ষার উন্নয়নে বাওয়া স্কুল ও কলেজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিদিন আট হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তা ছাড়া এর পাশে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও বাগমনিরাম সিটি করপোরেশন স্কুল আছে। সেখানেও আট থেকে দশ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প স্থাপন করলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বেশ অসুবিধা এবং চরম যানজটের সৃষ্টি হবে। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানের সামনে এ ধরনের সমস্যা চলমান আছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামার র্যাম্প স্থাপন না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ উল হাছান চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্কুলে আট হাজার শিক্ষার্থী আছে। এছাড়া বাওয়া স্কুলের পাশে একটি কিন্ডারগার্টেন, ইংলিশ মিডিয়াম ও বিপরীতে সিএমপি স্কুল আছে। সব মিলিয়ে ২০ হাজার শিক্ষার্থী এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। এমনিতেই এখানে যানজট লেগে থাকে। আবার পাশে মেরিডিয়ান শপিং কমপ্লেক্স হচ্ছে। এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প স্কুলের সামনে করা হচ্ছে। এটি যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা! অলরেডি কাজ শুরু হয়েছে। মাঝেমধ্যে তো রাস্তা বন্ধ করে কাজ চলে। এতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সবাই কষ্টে আছে। আমরাও কষ্টে আছি।’
বাওয়া স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্কুলটি একদম রাস্তার পাশে। স্কুলের সামনে সবসময় জ্যাম লেগে থাকে। আমরা অভিভাবকরা ছুটির সময় স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে র্যাম্প করলে যানজট আরও বেড়ে যাবে। এ ছাড়া র্যাম্প নির্মাণ করার সময় ভারি যন্ত্রপাতি উপরে ওঠানামা করা হচ্ছে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে।’
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘চিঠির বিষয়ে আমি অবগত নয়। চিঠি দিলেও কিছু করার নেই। সরকারের কাজ সময় মতোই চলবে। আর প্রকৌশলীদের বলেও দেওয়া হয়েছে স্কুলের সামনে কাজ করার সময় যেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কোনো সমস্যা না হয়।’
সারাবাংলা/আইসি/একে