হাটে গরু থাকলেও জমেনি বেচাবিক্রি, অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ
১৩ জুন ২০২৪ ১০:১৬
বগুড়া: ঈদুল আজহার বাকি আর চার দিন। এরই মধ্যে বগুড়ার সবচেয়ে বড় হাট মহাস্থানসহ বিভিন্ন হাট কোরবানির পশুতে ভরে গেছে। ছোট, বড় ও মাঝারি এবং দেশি-বিদেশি সব ধরনের গরুই উঠেছে। তবে এখনো জমে ওঠেনি। হাটগুলোতে এখন ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি। তবে দুই এক দিন পরই বিক্রি বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। হাটে এবার দেশি গরুর পাশাপাশি শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান গরুর সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। হাটে মাঝারি গরুর চাহিদাই বেশি। তবে দাম ছাড়তে নারাজ বিক্রেতারা।
মহাস্থান হাটে আটটি গরু নিয়ে এসেছেন রাহাত খান। তিনি বলেন, আমার কাছে চার লাখ থেকে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত গরু আছে। হাটে মানুষের ভিড় বাড়লেও ক্রেতা নেই। এখন দর্শনার্থী বেশি। তারা শুধু পশুর দর দাম করছেন। পশু কিনছেন কম। বিকেল পর্যন্ত একটা গরুও বেচতে পারিনি।
বগুড়া সদরের সরলপুরের রঞ্জু ব্যাপারী। তিনিও হাটে আটটি গরু এনেছেন। তিনি বলেন, দুই থেকে আড়াই লাখ করে দাম হাঁকলেও ক্রেতাদের মন পাওয়া যাচ্ছে না।
ধাওয়াপিকসন এলাকার বিক্রেতা সিরাজুল বলেন, এবারের হাটে তিনটি গরু এনেছি। দাম সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে। বিকেল পর্যন্ত একটাও বিক্রি হয়নি। আশা করছি আগামী দুই একদিনের মধ্যে হাট জমে উঠবে।
বগুড়ার কাহালুতে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে কাহালুর বিবিরপুকুর হাটে বসেছে কুরবানির পশুর হাট। হাটে পশুর আমদানি প্রচুর হলেও বেচা-বিক্রি কম। মহাসড়কের পাশে বসায় বগুড়া শহর থেকে অনেক ক্রেতা এ হাটে কুরবানির পশু কিনতে ছুটে আসেন। চলতি মাসের ১৭ তারিখে সারাদেশে পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপিত হবে। সেই হিসেবে ঈদের আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপচাঁচিয়ার ধাপ সুলতান হাট ও কাহালু উপজেলায় আরও পাঁচটি পশুর হাট বসবে। এছাড়া বিবিরপুকুর, জামগ্রাম, দুর্গাপুর ও মালঞ্চা হাটে নিদিষ্ট দিনে হাট বারে কুরবানির পশুর হাট বসবে। কাহালু সিদ্দিকীয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসা মাঠে কুরবানির পশুর হাট বসেছে। পশু উঠেছে বেশ। তবে দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিক্রেতারা। তারা বলছেন গো-খাদ্যের দাম এখন বেশ চড়া। তাই গত বছরের সঙ্গে এই বছর দাম মেলালে চলবে না।
এদিকে মহাস্থান হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসিলের পরিমাণ সরকার নির্ধারিত অংকের দ্বিগুন। শুধু তাই নয় ইজারদার কর্তৃপক্ষ ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের কাছে থেকে হাসিল আদায় করছেন বলে জানা গেছে। এনিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে ক্ষোভ দেখা গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গবাদিপশুর ক্ষেত্রে কেবল ক্রেতারা হাসিল দেবেন, বিক্রেতারা নন।
কিন্তু হাটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের পাশাপাশি বিক্রেতাদের কাছেও হাসিল নেওয়া হচ্ছে। পশু প্রতি ক্রেতার কাছে থেকে ৮০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছে থেকে ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
হাটের ইজারাদারদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, হাটের ইজারা নিতে সরকারকে লাখ লাখ টাকা দিতে হয়। সেই টাকা পুষিয়ে নিতেই পশু ক্রয়ের নির্ধারিত ফি করা হয়েছে।
হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদয়ের বিষয়টি নিয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২ বছর আগে নির্ধারিত হাসিলের যে টাকা নির্ধারিত ছিলো তা অব্যাহত রয়েছে। সে অনুযায়ি গরু প্রতি ৫/৪শ’ টাকা হাসিল নির্ধারণ ছিল।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে হাটে বিকেল পর্যন্ত অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চোখে পড়েনি।
সারাবাংলা/এনইউ