Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আন্তঃধর্মীয় সংলাপ: জলবায়ু সংরক্ষণে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ঘোষণা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ জুন ২০২৪ ২২:৪৭

‘জলবায়ু সংরক্ষণে ধর্মীয় সম্প্রীতি’ সেমিনারে জলবায়ু সংরক্ষণে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্মিলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জলবায়ু সংরক্ষণে নানা ধরনের উদ্যোগের পাশাপাশি ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গীরও প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মগুরুরা।

চট্টগ্রামে ‘জলবায়ু সংরক্ষণে ধর্মীয় সম্প্রীতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা বলেন, আমরা মানুষেরা শুধু স্রষ্টার সৃষ্টিকে উপভোগ করে যাচ্ছি। কিন্তু সৃষ্টির যত্নের কথা ভুলে গেছি। জলবায়ু সংরক্ষণে সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্ট প্রকৃতি ও সৃষ্ট মানব সমাজের মধ্যে ত্রিমাত্রিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর মোটেল সৈকতে যৌথভাবে এ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সেমিনারের আয়োজন করে কাথলিক খ্রিষ্টানদের ‘খ্রিষ্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশন, চট্টগ্রাম আর্চডায়োসিস’ এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্ণফুলী এরিয়া প্রোগ্রাম।

কোরআন তিলাওয়াত এবং গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি সেমিনার শুরু হয়। ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্ণফুলী এরিয়া প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক জনি রোজারিও এতে সভাপতিত্ব করেন।

স্বাগত বক্তব্যে খ্রিষ্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশন, চট্টগ্রাম আর্চডায়োসিসের সমন্বয়কারী এমরোজ গোমেজ বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টি করে অপরাপর সৃষ্টির ওপর কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন। সৃষ্টির যত্ন নিয়ে উপভোগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু মানুষ সমস্ত সৃষ্টির যত্নের কথা ভুলে গেছে। আমরা মানুষ শুধু সৃষ্টিকে উপভোগ করেই যাচ্ছি।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম কাথলিক আর্চডায়োসিসের প্রধান ধর্মগুরু ও সংলাপ কমিশনের চেয়ারম্যান আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার বলেন, ‘জলবায়ু সংরক্ষণ করতে সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্ট প্রকৃতি ও সৃষ্ট মানব সমাজের মধ্যে ত্রিমাত্রিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন। ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এ সম্পর্কের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা ধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির মাধ্যমে পুনর্প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। সব ধর্মের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মীয় সাধু-সন্তদের জীবনাদর্শ থেকে সংযমী হওয়া, পারস্পরিক মর্যাদা প্রদান করা এবং যেসব ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার জন্য বিনম্রতার সঙ্গে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষতিপূরণের মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেন প্রকৃতির যত্নে সকবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।’

বিজ্ঞাপন

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশে গত দুই দশক ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সুস্পষ্ট। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দুর্যোগের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণ করতে হলে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’

মাইজভাণ্ডারি একাডেমির সদস্য আরেফিন রিয়াদ ও আর্চডায়োসিসের ইউজিন শুভর সঞ্চালনায় সেমিনারে নিজ নিজ ধর্মের শিক্ষার আলোকে বক্তব্য রাখেন নটরডেম কলেজের প্রভাষক ড. লিটন হিউবার্ট গোমেজ, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুন্নবী আজহারী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য এবং সীতাকুণ্ডের লতিফা-সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শিমুল বড়ুয়া।

সেমিনারে অংশ নেওয়া সবাই জলবায়ু সংরক্ষণে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্মিলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ওয়ার্ল্ড ভিশন খ্রিষ্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশন চট্টগ্রাম আর্চডায়োসিস জলবায়ু জলবায়ু সংরক্ষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর