এনবিআরের সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
১৩ জুন ২০২৪ ১৮:৩৪
ঢাকা: মূসকের (ভ্যাট) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। ৬০ দিন তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ পাওয়ার পর ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপারকে (ইমিগ্রেশন) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম শেখের সই করা নিষেধাজ্ঞার এই চিঠি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) কাছে পাঠানো হয়েছে।
চারটি মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানকে ১৫২ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে দিয়ে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করায় বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (ভ্যাট) সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। গত মঙ্গলবার (১১ জুন) দুদকের ঢাকা সমন্বিত কার্যালয় ১-এ মামলাটি দায়ের করেন সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম শেখ।
দুদক সূত্রে জানা যায়, চারটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোন লিমিটেডের ৬টি নথিতে ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৭ টাকা, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের ৭টি নথিতে ৫৭ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫১ টাকা, রবি আজিয়াটার ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৮৮ টাকা এবং এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের ২০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৫২ টাকাসহ মোট ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করেন ওয়াহিদা রহমান।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, স্থান ও স্থাপনার ওপরে ভ্যাট প্রযোজ্য হওয়ায় তা মেনে নিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে Alternative Dispute Resolution (ADR) সভায় সম্মত হয়। এরপর যথাসময়ে ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৩০ টাকা পরিশোধ করা হয়। ওই রাজস্ব নির্ধারিত কর মেয়াদে পরিশোধ না করায় মূসক আইন অনুযায়ী সুদের পরিমাণ হয় ১৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯০ টাকা।
মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(৩) অনুসারে সুদ আদায়ের জন্য নথি উপস্থাপন করা হলে তৎকালীন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী দ্রুত সুদের হিসাব করার নির্দেশ দেন। কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী কিছু যুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে একক নির্বাহী আদেশে অসৎ উদ্দেশ্যে সুদ আদায় করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
জানা গেছে, ১৫২ কোটি টাকা সুদ আইনানুগভাবে আদায়যোগ্য ছিল। কিন্তু তিনি ওই সুদ আদায় না করার নির্বাহী সিদ্ধান্তটি দেন। এতে সরকারের ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা আদায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয় দুদকের কাছে।
কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার হিসেবে অবসরে যান। বর্তমানে তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএলে) রয়েছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম
