Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা কম, বিক্রেতারা বলছেন— অ্যাগ্রোর দাপট

রমেন দাশ গুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুন ২০২৪ ২২:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পশুর হাটে মানুষ আর মানুষ। এদের মধ্যে ক্রেতা ক’জন— এমন প্রশ্ন বিক্রেতাদের। এমন প্রশ্নের কারণ, হাটে ঘুরছেন মানুষ, গরু দেখছেন, দামও জিজ্ঞেস করছেন; কিন্তু কিনছেন না। অন্যদিকে, বিক্রেতারাও গরুর দাম ধরেই রেখেছেন, গরু যেন ‘একদর-একদাম’!

কোরবানির আগে একদিন ‘হাতে রেখে’ শনিবার (১৫ জুন) চট্টগ্রাম নগরীর পশুর হাটগুলোর অবস্থা এমন। এসব হাটে যারা গরু বিক্রি করতে এসেছেন তাদের অধিকাংশই প্রান্তিক গৃহস্থ, কৃষক ও ছোট খামারি। আপাতত দাম ধরে রাখলেও শেষপর্যন্ত গরুগুলো বিক্রি করতে পারবেন কি না, আবার ক্রেতারা যে দাম দিতে চাচ্ছেন, তাতে বিক্রি করলে লোকসান হবে— এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা তাদের।

বিজ্ঞাপন

প্রান্তিক খামারি ও গৃহস্থরা বলছেন, এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে গত তিন-চার বছর ধরেই তারা পড়ছেন। বড় বড় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের অ্যাগ্রো ব্যবসার দাপটে তাদের এমন অবস্থা হয়েছে। নগরীর সাগরিকা বাজারের এক বিক্রেতা বললেন, ‘অনেকেই হাটে এসেছেন, কিন্তু গরু কেনার জন্য নয়। অ্যাগ্রো থেকে গরু কিনে ঠকেছেন কি না, সেটা যাচাই করতে এসেছেন।’

নগরীর ‘এক কিলোমিটার’ এলাকায় নুরনগর হাউজিং সোসাইটি বাজারে গরু নিয়ে আসা গৃহস্থ শওকত আলী বলেন, ‘এনজিও থেকে লোন নিয়ে, বৌয়ের গহনা বন্ধক দিয়ে গরু পালার (লালনপালন) শখ মিটে গেছে। আগামীবার থেকে আর আসব না। গরুও পালব না। সবাই অ্যাগ্রো থেকে গরু কিনুক।’

কোরবানি উপলক্ষ্যে সবধরনের গরুর সমারোহ হাটগুলোতে। কিন্তু, বেচাকেনা কম।

কোরবানি উপলক্ষ্যে সবধরনের গরুর সমারোহ হাটগুলোতে। কিন্তু, বেচাকেনা কম।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, উপজেলা ও মহানগরী মিলিয়ে এবার স্থায়ী ৭২টি ও অস্থায়ী ১৭৬টি কোরবানি পশুর হাট বসেছে। উপজেলার মধ্যে ফটিকছড়িতে ৪৫টি, মীরসরাইয়ে ২৭টি, হাটহাজারীতে ২৩টি, সন্দ্বীপে ২০টি, লোহাগাড়া, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে ১৬টি করে, সীতাকুণ্ডে ১৪টি, বাঁশখালীতে ১২টি, আনোয়ারায় ১১টি, বোয়ালখালীতে ১০টি, পটিয়া ও চন্দনাইশে ৯টি করে, সাতকানিয়ায় ৬টি এবং কর্ণফুলী উপজেলায় ৪টি হাট বসেছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১০টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে সাগরিকা, নুরনগর হাউজিং সোসাইটি ও বিবিরহাট বাজারে বিপুল সংখ্যক গরু এসেছে। সেগুলো যারা এনেছেন, তাদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার গ্রামগঞ্জ থেকে আসা গৃহস্থ, কৃষক ও প্রান্তিক খামারি। তবে সংখ্যায় কমে গেলেও কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, মাগুরা, রাজশাহী, নওগাঁ, ঝিনাইদহ, কুমিল্লা থেকে বড় গরু বাজারগুলোতে এসেছে।

এ তিনটি বাজারে ক্রেতার সমাগমও বেশি দেখা গেছে। এর পাশাপাশি ছোট, ছোট অন্য হাটেও ক্রেতার কমতি নেই। নোয়াখালী থেকে ৩৫টি গরু নিয়ে সাগরিকা বাজারে এসেছেন আব্দুল মালেক। শনিবার দুপুর পর্যন্ত তিন দিনে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। অথচ তার গরুর দাম ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে।

তিন দিন ধরে হাট শুরু হলেও বেচাবিক্রি নাই। তাই পশু মালিকের মুখে চিন্তার রেখা।

তিন দিন ধরে হাট শুরু হলেও বেচাবিক্রি নাই। তাই পশু মালিকের মুখে চিন্তার রেখা।

অনেকটা ‘সাধ্যের মধ্যে’ দাম চাওয়ার পরও গরু বিক্রি না হওয়ায় আব্দুল মালেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য গরু এনেছি। এখন দেখছি, এ দামের গরুরই কাস্টমার নেই। দুই-চারজন আসে, দাম জিজ্ঞেস করে, এর পর চলে যায়। ছোট গরু বোধ হয় পছন্দ হচ্ছে না। আসলে অ্যাগ্রোর কারণে আমাদের সমস্যা হয়ে গেছে। বিদেশি গরু আছে সেখানে, দেশি গরুর বাজার কমে গেছে। এরপর ভারত থেকে এবার গরু এসেছে, মিয়ানমার থেকেও এসেছে। এজন্য কাস্টমার পাচ্ছি না।’

একই বাজারে মীরসরাই থেকে জাহেদ নামে এক যুবক আরও তিন-চারজন মিলে সাতটি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রতিটি গরুর দাম হাঁকছেন এক লাখ ৬০ হাজার করে। তারাও গত তিনদিনে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি বলে জানান। চন্দনাইশের প্রান্তিক ছোট খামার গাউছিয়া অ্যাগ্রো থেকে চারটি গরু নিয়ে নুরনগর হাউজিং সোসাইটি বাজারে এসেছেন মো. মিরাজ। একটি গরু আড়াই লাখ টাকায় শনিবার বিক্রি করেছেন।

মিরাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কাস্টমার আছে, কিন্তু দাম উঠছে না। যে গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে তিন লাখ, কাস্টমার সেটা দিতে চাচ্ছেন এক লাখ। আবার যে গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে এক লাখ, কাস্টমার বলছেন ৪৫ হাজার। এভাবে কী ব্যবসা হয়! দেশে অ্যাগ্রো বেড়ে গেছে। গরু প্রচুর। বড় বড় অ্যাগ্রোগুলো ফেসবুকে-ইউটিউবে যেভাবে প্রচার করে, সেখানে লোকজন যাচ্ছে, কিনছে। হাটে এসে গরু কেনার দিন বোধহয় আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাবে।’

গরু বেচাকেনা হলেও তা আশানুরূপ নয়

গরু বেচাকেনা হলেও তা আশানুরূপ নয়

একই বাজারে সাতকানিয়া থেকে ২০টি গরু নিয়ে আসা গৃহস্থ শওকত আলী একেবারে হতাশ। একেকটি গরুর দাম দেড় থেকে দুই লাখের মধ্যে। তিন দিনে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তার ভাষায়, ‘আজ (শনিবার) কেউ গরুর দড়িও ছুঁয়ে দেখেনি, অথচ হাটে লাখো ক্রেতার ভিড়।’

শওকত আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গরুকে ইনজেকশন দিই না, বাজার থেকে খাদ্য কিনে খাওয়াই না। আমি, আমার ভাই, চাচাতো ভাইদের ঘরে পালা (লালনপালন) গরু নিয়ে এসেছি। জমিতে ঘাস খাওয়া, ভাতের ফেন খাওয়া গরু এনেছি। আমাদের গরু বিক্রি হচ্ছে না। অ্যাগ্রোতে ইনজেকশন দেয়, ফুড খাওয়ায়, সেগুলো কেনার লোকের অভাব নেই। শহরে গরু নিয়ে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। গতবার কোনোমতে বিক্রি করেছিলাম। এবার তো মনে হচ্ছে গরু ফেরত নিয়ে যেতে হবে।’

শওকতের চাচাতো ভাই মোমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতবারও লস দিয়ে শেষে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। এবার এনজিও থেকে লোন নিয়ে গরু বড় করে এনেছি। এবারও যদি লস দিতে হয়, তাহলে গরু পালা ছেড়ে দেওয়া ভালো হবে।’

বিবিরহাট বাজারেও আগের জৌলুস দিন দিন কমে আসছে। শনিবার সকালে সেই বাজার ঘুরে আসেন স্থানীয় পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। ছাত্রজীবনে দেখেছি, কোরবানির হাটের দিন বিবিরহাট বাজারের সামনের রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত জ্যাম লেগে থাকতো। এখন বিবিরহাট বাজারের সামনের রাস্তা পর্যন্ত গরু আসে না। যা বেচাকেনা হয়, বাজারের ভেতরেই।’

মধ্যবিত্তের শ্রেণির মানুষের কথা বিবেচনায় হাটে তোলা হয়েছে ছোট ও মাঝারি গরু

মধ্যবিত্তের শ্রেণির মানুষের কথা বিবেচনায় হাটে তোলা হয়েছে ছোট ও মাঝারি গরু

সেই বাজারে মাত্র তিনটি গরু নিয়ে পটিয়া থেকে এসেছেন মাহমুদুল হক। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘হাট দেখেন, অনেক মানুষ, কিন্তু কাস্টমার কম। ঘরে পালা গরু, এক লাখ তিরিশ-চল্লিশ হাজার দাম বলছি। তা-ও কেউ কিনছে না। অথচ অ্যাগ্রো থেকে পাঁচ লাখ, দশ লাখ টাকায়ও গরু কিনছে।’

রাঙ্গুনিয়া থেকে ওই বাজারে দুটি গরু নিয়ে আসা প্রান্তিক কৃষক সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ হাট থেকে গরু কিনবে কেন? এখানে এক লাখ টাকার গরু কিনলে পাঁচ হাজার টাকা হাসিল দিতে হচ্ছে। অ্যাগ্রো থেকে গরু কিনলে তো হাসিল দিতে হয় না। তারপর হাট থেকে গরু কিনলে সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। অ্যাগ্রো থেকে গরু কিনে রাখলে কোরবানির আগেরদিন বাড়িতে নিয়ে গেলে হয়।’

কুমিল্লা থেকে ওই বাজারে গরু নিয়ে আসা ইসমাইল সারাবাংলাকে বলেন, ‘গরু লালন-পালনের খরচ, সেটা হাটে নিয়ে আসার পরিবহন খরচ, আমরা তিনজন লোক এসেছি, আমাদের থাকা-খাওয়া, সব মিলিয়ে লস হচ্ছে। প্রতিবছর নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া থেকে গরু আসে। গত দুইবছর ধরে সেখান থেকে চট্টগ্রামে গরু আসা অনেক কমে গেছে। নোয়াখালী-কুমিল্লা থেকেও আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এখানে অ্যাগ্রো অনেক বেশি। ক্রেতাদের বেশিরভাগ যারা আগে হাট থেকে কিনতেন, তারা অনেকেই অ্যাগ্রো থেকে কিনছেন।’

বিবিরহাট বাজারে নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে গরু কিনতে যাওয়া মো. জিসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানির হাট আছে আর মাত্র একদিন। কিন্তু বিক্রেতারা তো দাম ছাড়ছেন না। যেটা বলছেন একদর। ক্রেতা যথেষ্ট আছে। শেষদিনের জন্য সবাই অপেক্ষা করছেন। শেষদিনে হয়তো বিক্রেতারা দাম ছেড়ে দেবেন।’

নগরীর ঈদগাহ বৌবাজার থেকে সাগরিকা বাজারে যাওয়া আসাদুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী গরু মিলছে না। দামে মিললে পছন্দ হচ্ছে না। পছন্দ হলে দামে মিলছে না। সকাল ১০টার দিকে এসেছি। এখন বাজে ২টা। গরু কিনতে পারিনি।’

বাকলিয়া থেকে যাওয়া আইয়ূব আলী চৌধুরী বলেন, ‘সকাল থেকে গরু কেনার জন্য হাটে ঘোরাঘুরি করছি। পটিয়ার শান্তিরহাটে গিয়েছি, কমল মুন্সীর হাটেও গিয়েছি। সেখানে যেরকম গরু দেখেছি, সাগরিকায়ও একই গরু। কয়েকটা অ্যাগ্রোতেও গিয়েছি। আমরা মধ্যম আয়ের মানুষ। অ্যাগ্রোর গরু আমাদের জন্য নয়। তবে কয়েকটি অ্যাগ্রোতে ছোট-বড় সব ধরনের গরু আছে। কিন্তু দেশি গরু কিনতে হলে হাটের বিকল্প নেই। আমি হাট থেকে দেশি গরুই কিনব।’

ক্রেতার খোঁজে স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে বিক্রেতা

ক্রেতার খোঁজে স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে বিক্রেতা

চন্দনাইশের জাবেদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি গ্রামেই গরু কিনে ফেলেছি। এখন বিবিরহাট বাজারে এমনিতে ঘুরতে এসেছি। এখনও গ্রামের ঘরে লালন-পালন করা গরুই সেরা, এগুলোর চাহিদা বেশি। শহরের একশ্রেণির মানুষ আভিজাত্য প্রদর্শনের জন্য অ্যাগ্রোর গরুর দিকে ঝুঁকেছেন। শেষপর্যন্ত প্রান্তিক খামারির গরু অবিক্রিত থাকবে বলে মনে হয় না।’

সুইজারল্যান্ড প্রবাসী মো. মহসিন চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে গড়ে তুলেছেন ‘আছিয়া অ্যাগ্রো ফার্ম’। তাদের খামারে শাহীওয়াল, সিব্বি, ইন্দো-ব্রাজিল, ক্রস ব্রাহামাসহ বিদেশি বিভিন্ন জাতের ১০০টি গরু ছিল। এর মধ্যে ৬১টি বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি ৩৯টি গরু বিক্রি না হলে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

মহসিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার ফার্মে অন্তত ছয়মাস আগে থেকে কোরবানির জন্য বুকিং শুরু হয়েছিল। এসব গরু গতকাল (শুক্রবার) থেকে ডেলিভারি শুরু হয়েছে। গত দু’দিনে বিশটি গরু বিক্রি হয়েছে। আমার কাস্টমার সব চট্টগ্রাম শহরের মানুষ। আমার ফার্মে মাঝারি ও সাইজের ছোট গরুও আছে। একজন ক্রেতা হাটে না ঘুরে যদি এক ফার্মেই নিজের পছন্দের গরু পেয়ে যান, তাহলে ‍উনি হাটে যাবেন কেন?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের গরুর দাম একটু বেশি। আমরা যেহেতু বুকিং দেওয়া গরু ছয় মাস ধরে নিজেরা লালন-পালন করেছি, সেটার খরচ তো আমাকে দিতে হবে। আমরা যেভাবে গরুর যত্ন করি, মাথার ওপর ফ্যান থাকে, টেম্পারেচার ঠিক রাখার জন্য আমরা নানা ধরনের ব্যবস্থা নিই। এরপর উন্নত খাবার, স্টাফ খরচ আছে।’

কৃত্রিম পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করা হয় কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাঁচা খড়, খৈল, ভূষি এসবই খাওয়ানো হয়। ইনজেকশন দিয়ে মোটাতাজা করার তো প্রশ্নই আসে না। বাজার থেকে যেসব মানসম্মত অনুমোদিত খাদ্য, সেগুলো কিনে খাওয়ানো হয়।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাগ্রোতে যারা পশু লালনপালন করছে, তারা প্রকৃত খামারি। কারণ তারা সারাবছর ধরে পশু লালনপালন করছে। তারা আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার দিচ্ছে, বছরব্যাপী নানা ধরনের টিকা দিচ্ছে। ফলে তাদের কাছে থাকা গরুগুলো নিরাপদ, সেগুলোতে কোনো হিডেন রোগব্যাধি থাকার সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, ‘বিক্রির সময় জীবন্ত পশুর ওজন করে সেটা ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করছে। অর্থাৎ কোনো গরুর ওজন যদি হয় ৫০০ কেজি, তারা কেজিপ্রতি গোশতের দাম হিসেব করে গরুর দাম নির্ধারণ করছে। ফলে বাজারের রেটের চেয়ে অ্যাগ্রোতে রেট কম পড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া ক্রেতা আরেকটা সুবিধা পাচ্ছেন যে, তাকে হাটে ঘোরাঘুরি, দরদাম করা, হাসিল নিয়ে ঝামেলা এসব পোহাতে হচ্ছে না। হাটে গিয়ে শেষপর্যন্ত গরু কিনতে পারবে কি না, সে অনিশ্চয়তা থাকছে না। নিজের সুবিধামতো অ্যাগ্রো থেকে গরু বাসায় নিয়ে যেতে পারছে। সব মিলিয়ে অ্যাগ্রোর দিকেই মানুষ ঝুঁকছে।’

ছবি: শ্যামল নন্দী, স্টাফ ফটোকরেসপন্ডেন্ট

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

অ্যাগ্রো ক্রেতা গরু বিক্রি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর