শেষ মুহূর্তেও ব্যস্ত সময় কাটছে কামারদের
১৬ জুন ২০২৪ ১৮:১৬
খুলনা: মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমা নিয়ে পশু কোরবানি এই ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ। শেষ সময়ে এসে তাই পশু কোরবানি ও মাংস কাটার দা-ছুরি, চাকু-বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটছে খুলনা মহানগর ও ৯টি উপজেলার কামারদের।
সরেজমিনে খুলনার রূপসা উপজেলার বিভিন্ন কামার পট্টি ঘুরে দেখা যায়, টুংটাং শব্দে মুখর হয়ে উঠছে চারপাশ। দোকানে কয়লার আগুনে পোড়ানো হচ্ছে লোহা। তারপর সেই লোহা রেলের লোহার ওপর ফেলে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া পুরনো ধারালো অস্ত্রে শান দেওয়ার কাজও চলছে পুরোদমে। কথা বলারও যেন সময় পাচ্ছেন না কারিগররা।
রূপসা উপজেলার ৩ নম্বর নৈহাটি ইউনিয়নের জাবুসা এলাকার বাসিন্দা কামরুল শেখ বলেন, ‘বর্তমানে নিজেদের দা-বটি দিয়ে কোরবানির মাংস কাটতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই কোরবানির ঈদ এলে নিজেদের পছন্দমতো মাংস কাটার যন্ত্রপাতি তৈরি করতে অনেকেই কামারের দোকানে ভিড় জমান। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর পশু ও মাংস কাটাকাটির সরঞ্জামের দাম একটু বেশি।’
বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি প্রকারভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, সাইড ছুরি ৫০০ টাকা এবং কোরবানির বড় ছুরি এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চাপাতি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, লোহার বাঁটসহ চাপাতি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং লোহার বটি প্রতি পিস ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর কোরবানির পশুর মাংস কাটাকুটির সরঞ্জামের দাম গত বছরের চেয়ে বেশি বলে ক্রেতাদের যে অভিযোগ, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন কামাররাও। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াকে তারা সরঞ্জামের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে দায়ী করছেন।
রূপসা উপজেলার ৫ নম্বর ঘাটভোগ ইউনিয়নের কামার সুকুমার কর্মকার বলেন, ‘দা-বটি-ছুরি এসব তৈরি করার জন্য আমরা লোহা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসি। গত বছরের তুলনায় লোহার দাম বেশি। লোহা পোড়াতে যে কয়লা প্রয়োজন হয়, তার দামও বেশি। এ কারণে দা-বটির দামও বেশি। তবু ক্রেতারা এসে পছন্দমতো জিনিস কিনছেন।’
একই ইউনিয়নের আলাইপুর বাজারের কামার বিষ্ণু বলেন, ‘সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদের সময় এ শিল্পের কদর বাড়ে। তবে বর্তমানে গরু কাটার প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম একটু বেশি। সে কারণে বিক্রি অতটা নয়।’
সারাবাংলা/টিআর