জয়পুরহাটে চামড়া বাজারে এবারও ধস, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিপাকে
১৮ জুন ২০২৪ ০৮:২৯
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে গত বছরের মতো এ বছরও কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। এলাকা থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় চামড়া কিনে গাড়ি ভাড়াও তুলতে পারছেন না মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। ফলে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেক জায়গায় এই দামে বিক্রি না হওয়ায় অবহেলায় মাটিতে লুটাচ্ছে কোরবানির চামড়া। স্থায়ী চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার চামড়া দাম বেশি।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিন্ডিকেট করে নিজেদের ইচ্ছামতো চামড়া কিনছেন আড়তদাররা। সে কারণেই চামড়ার বাজারে এই ধস। ফলে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার বাজারে প্রতিটি গরু চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া কেনার আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। জয়পুরহাট সদর উপজেলার রাংতা গ্রামের আক্কাস আলী, কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের গোলাম রব্বানী, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া গ্রামের রাসেল হোসেনসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার কোরবানিদাতারা বললেন, গত বছরের মতোই এবারও চামড়ার দাম নেই।
চামড়ার বাজার ধসের কারণে লোকসানের শিকার জেলার প্রায় সব মৌসুমি ব্যবসায়ী। শহরের শাপলা নগর এলাকার বিপ্লব হোসেন, জামালগঞ্জ বাজারের মতিউর রহমানসহ কয়েজন মৌসুমি ব্যবসায়ী জানান, হঠাৎ করে কোরবানির চামড়ার দরপতনে দিশেহারা তারা। লাভ তো দূরের কথা, রীতিমতো লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ফড়িয়া বললেন, সীমান্তে কড়াকড়ি না থাকলে তারা ওপারে চামড়া পাঠিয়ে কিছু লাভের মুখ দেখতেন। এবার সেটিও হচ্ছে না। পুঁজি সংকট ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনাসহ নানা কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে।
জয়পুরহাট শহরের চামড়া ব্যবসায়ী রায়হান হোসেন ও শাহিন আকতার বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা কোটি কোটি টাকা। হাতে টাকা না থাকায় তারা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে চামড়া কিনতে পারছেন না। ফলে বাজারে চাহিদা কম। সে কারণে চামড়ার মূল্যও কমে গেছে। এ ছাড়া চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। এতে দেশের স্থানীয় বাজারে আপাতত চামড়া কেনাবেচা করতে হচ্ছে, যেটিও কি না চামড়ার দাম কমার একটি কারণ।
জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাহিদ নেওয়াজ বলেন, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাঁটার ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তারকাঁটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাটিকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
সারাবাংলা/টিআর
কাঁচা চামড়া কোরবানির পশুর চামড়া চামড়া চামড়া ব্যবসায়ী চামড়া সিন্ডিকেট জয়পুরহাট