Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারী বর্ষণে টেকনাফের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুন ২০২৪ ১৬:৫৯

কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফে ভারী বর্ষণে এ পর্যন্ত অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে বলে জানিয়েছেন ছয় ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনপ্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত ৯টার পর থেকে কক্সবাজার জেলায় ভারী থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কক্সবাজার শহরে অবস্থিত কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অথচ টেকনাফে শুধুমাত্র ছয় ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডেরে তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলায় এ পর্যন্ত প্লাবিত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া না গেলেও টেকনাফের ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তথ্য মিলেছে। এরমধ্যে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের আট গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২ গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার সাত গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছয় গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের সাত গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য বলছে, এতে কমপক্ষে ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের ১২ গ্রামের চার হাজার বেশি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এসব গ্রাম হলো, জালিয়াপাড়া, সাইটপাড়া, ফুলের ডেইল, আলী আকবর পাড়া, রঙ্গিখালী লামার পাড়া, আলীখালি, চৌধুরী পাড়া, পূর্ব পানখালী, মৌলভীবাজার লামার পাড়া, ওয়াব্রাং, সুলিশপাড়া, পূর্ব সিকদার পাড়া। এসব গ্রামের চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

টেকনাফ পৌরসভার কলেজপাড়া, শীলবুনিয়া পাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, এই সাত গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি। পানিতে ডুবে আছে টেকনাফ কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। পৌরসভার ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু ঘরবাড়িসহ চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় মাছের ঘেরসহ লবণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, সদরের ছয় গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এগুলো হলো, মহেশখালীয়াপাড়া, তুলাতুলি, লেঙ্গুরবিল, খোনকারপাড়া, মাঠপাড়া, রাজারছড়া।

সবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোছাইন জানিয়েছেন, শাহপরীরদ্বীপের সাত গ্রামসহ সাবরাং ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানিয়েছেন, লম্বা বিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, রইক্ষ্যং গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাড়ে ৩০০ পরিবার সব চেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে উনচিপ্রাং এলাকার একটি রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বসতবাড়িতে এক ফুট পানি উঠেছে।

বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জানান, তার ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের কম বেশি পানিবন্দি। এতে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ১০ গ্রাম। এক হাজার পরিবার খুব খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ভারী বর্ষণের ফলে কিছু গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি অতিভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্রে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

সারাবাংলা/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর