আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে: মোমেন
২০ জুন ২০২৪ ২১:৫১
ঢাকা: দুর্নীতিকে উন্নতির গতিধারার প্রধান অন্তরায় হিসেবে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গতি ও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রধান প্রতিবন্ধক দুর্নীতি। আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে। তাতে জনগনের হয়রানি বাড়ছে। এই অল্পসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ আমলাদের জন্য গোটা আমলাতন্ত্র বদনামের ভাগিদার হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
বাজেটের ওপর আলোচনায় আব্দুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের গতি গত ১৬ বছর ধরে যেভাবে ধরে রেখেছেন, তা বিশ্বের বিস্ময়। বর্তমানে তার এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ হয় না। খরচ বাড়ে, জনগণের হয়রানি বাড়ে।
প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন উল্লেখ করে মোমেন বলেন, এই বাজেটে দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচার বন্ধের নির্দেশনা ও যথাযথ পদক্ষেপ জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে। সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে।
সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে মাঠে ময়দানে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। সাধারণ নাগরিক এখন অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। তারা সবাই জাতির আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছে। সাধারণ নাগরিকের মধ্যে বড় প্রশ্ন রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অধিকতর কর্মসংস্থান, রাজস্ব বৃদ্ধি ও রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ও প্রশাসনের হয়রানি নিয়ে। দেশে যথেষ্ট কর্মসংস্থান না থাকায় প্রতিবছর হাজার হাজার কর্মক্ষণ লোক বৈধ ও অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, কর্মসংস্থান বা উদ্যোক্তা তৈরির কাজটি সাধারণত বেসরকারি খাত করে থাকে। সেজন্য তাদের যথেষ্ট ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। এবারের বাজেটে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ঋণ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
ব্যাংকের বেহাল দশার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, বাজেটে এর প্রতিকারের কথা থাকলে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো। বরং কালো টাকাকে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করার ঘোষণায় সৎ করদাতারা হতাশ হয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পরিমার্জন প্রয়োজন বোধ করি। দেশের স্বার্থে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা অর্জনে সাদাকে সাদা, কালকে কালো না বললে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি অবিচার করা হয়। অর্থমন্ত্রী বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পুরণে যা যা করা প্রয়োজন, তা করবেন বলে বিশ্বাস করি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর