ঢাকা: বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে প্রভাব বিস্তারকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবস্থান খুবই জোরাল। উপ-মহাদেশে যে ক’টা রাজনৈতিক দলকে বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়, সেগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ অন্যতম। ভূ-রাজনীতির হিসাব-নিকাশ কষার সময়ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সবাই। ক্ষমতার রাজনীতিতে গত ৭৫ বছর ধরে বাংলাদেশে যে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ, তাতে বিশ্ব রাজনীতিতে এ দলটিকে গুরুত্ব না দেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
বিশ্ব রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের এই দাপট শুরু হয়েছিল মূলত বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে। তার নেতৃত্ব, তেজস্বী ব্যক্তিত্ব, দূরদর্শিতা, ভূ-রাজনীতি নিয়ে নিজস্ব চিন্তা ও দর্শন পৃথিবীর অপরাপর নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি এবং তার দল আওয়ামী লীগ পরিচিতি হয়ে ওঠে। মুজিব মানেই আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ মানেই বাংলাদেশ— এমন ধারণাই জন্মেছিল বিশ্ব রাজনীতিতে। তাই প্রতিষ্ঠার মাত্র ৩ বছরের মাথায় সেই ১৯৫২ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের একজন নেতা হিসেবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ন্যাশনাল কংগ্রেসে দাওয়াত পেয়েছিলেন শেখ মুজিব। পরবর্তী ৭২ বছর এ ধারা অব্যাহত আছে।
দলের নেতৃত্ব গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব, নিখুঁত রাজনৈতিক দর্শন, দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনার কারণে বিশ্ব পরিমণ্ডলে আওয়ামী লীগ পরিচিত হয়ে ওঠে । বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়া চীন’ পড়লে সহজেই বোঝা যায় তিনি এবং তাঁর দল বিশ্ব রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। সে কারণে পৃথিবীর যে-কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের চেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর ভিনদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এত নজরদারি ছিল বেশি। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ১৯৪৮-৭০ পর্যন্ত প্রতি মুহূর্ত বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক কর্মকা-পর্যবেক্ষণ করত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করত। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাড়তি গুরুত্ব দিত। তাদের এই বাড়তি গুরুত্বই বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বনেতা হিসেবে খ্যাতি এনে দেয়।
বঙ্গবন্ধুর অসামান্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত ‘নিউজ উইক’ ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে ‘পয়েট অব পলিটিক্স’ বলে অভিহিত করে। তার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে ব্রিটেনের আরেক শীর্ষ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে বলা হয় ‘শেখ মুজিব ছিলেন এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব’।
শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবাই সমীহ করতেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবকে। আফ্রিকাসহ অনেক দেশের মুক্তি সংগ্রামেও আওয়ামী লীগ অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ভিয়েতনামের ঐতিহাসিক যুদ্ধেও যোদ্ধারা দীর্ঘ-সংগ্রামের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর নেতা বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিশ্বমঞ্চে যখন আবির্ভাব ঘটল বঙ্গবন্ধুর, তখন বিশ্বনেতারা তাকে একবার কাছে থেকে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। এরকমই একটি সময়ে, ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।’ এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক করেন কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো। সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটিই হিমালয়। আমি এভাবেই হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা পেয়েছি।’
সদ্যস্বাধীন একটা দেশের প্রধান থেকে শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠেন বিশ্বনেতা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রধানরা তাকে মানবতা ও মুক্তির দূত হিসেবে গণ্য করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর অকাল প্রয়াণের খবর প্রকাশ হওয়ার পর কেঁপে ওঠে আন্তর্জাতিক বিশ্ব । বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, ‘মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ কখনোই জন্ম নিত না।’ দ্য টাইমস অব লন্ডন পত্রিকার ১৯৭৫ সালের ১৬ অগাস্ট সংখ্যায় বলা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।’ পশ্চিম জার্মানির পত্রিকায় বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে চতুর্দশ লুইয়ের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তিনি জনগণের কাছে এত জনপ্রিয় ছিলেন যে, লুইয়ের মতো তিনি এ দাবি করতে পারেন, আমিই রাষ্ট্র।’
বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হেনির কিসিঞ্জার বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তেজি এবং গতিশীল নেতা আগামী বিশ বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে আর পাওয়া যাবে না।’
আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক ও মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল বাংলাদেশকে চিনতো বঙ্গবন্ধুর নামে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে এক সাক্ষাৎকারে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘আফ্রিকার কোটি কোটি কৃষ্ণ মানবের মুক্তিদূত নেলসন ম্যান্ডেলার সমকক্ষ তোমাদের নেতা (বঙ্গবন্ধু)। তার অবর্তমানে বাংলাদেশ অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে এবং এতিমের মতো অবহেলা ও অবজ্ঞার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। জন্মের পরপরই বাংলাদেশ অভিভাবকহীন ও নেতৃত্বহারা হয়ে পড়ায় এই দেশটির যে বিশাল সম্ভাবনা ছিল, তা রুদ্ধ হয়ে পড়ে। তোমাদের জাতির ভাগ্যে এতবড় ট্রাজেডি দেখে খুব আফসোস হয়।’
মাহাথির মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) তার দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে, অন্য দেশের কারাগারে থেকে, শুধু তার নামের জাদুমন্ত্রে পৃথিবীর ভৌগলিক রেখা পরিবর্তন করে একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় ঘটান। সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসে এর দ্বিতীয় নজির নেই।
বিশ্বজুড়ে নন্দিত নেপোলিয়ন বোনাপার্টের চাইতেও বঙ্গবন্ধুকে সফল বলে মন্তব্য করেছিলেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রানচিস মিতেরা। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশের সময় বঙ্গবন্ধুর ছবির দিকে তাকিয়ে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদকে তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের দেশের অদৃশ্য শক্তিধর এই লোকটির কী অজানা জাদু ছিল! দেখ, আমাদের ফ্রান্সের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর নেপোলিয়ান বোনাপার্ট দি গ্রেট ফ্রান্স থেকে বহু দূরে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে বন্দি হয়ে পড়ার পর ফরাসি জাতির জন্য বা ফ্রান্সের জন্য আর কোনো অবদান রাখতে পারেননি। কিন্তু তোমাদের ভাগ্য-নির্মাতা (বঙ্গবন্ধু) তোমাদের দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে, অন্য দেশের কারাগারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ডেথ সেলে বসেও, শুধু তার নামের জ্যোতির্ময় আলোকচ্ছটা নিক্ষেপ করে, পৃথিবীর ভৌগোলিক রেখা পরিবর্তন করে, একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় ঘটান এবং একটি নতুন জাতির জন্ম দেন।’
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে এক বিস্ময়কর ঘটনা বলে অভিহিত করে ফ্রান্সের এই রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘সমগ্র মানব জাতির ইতিহাসে এবং বিশ্বের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে এমন দ্বিতীয় কোনো বিস্ময়কর ঘটনা কেউ কোনদিন, কোথাও প্রত্যক্ষ করেনি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মতো যোদ্ধা জাতিকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অখ্যাত-অজ্ঞাত বীরযোদ্ধারা যখন পরাজিত করেছে বলে সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানীতে ভূমিকম্প তৈরি হয়। বিশ্বের নেতারা এবং সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা বিশ্বাস করতে পারছিল না! যার শিহরণ জাগানো জাদুবলে প্রায় শূন্য সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তোমরা (বাঙালি জাতি) ঐতিহাসিকভাবে বিজয়ী জাতির খেতাব পেলে, তার নামের গৌরব-গাঁথা বিশ্বের সব মানুষের হৃদয়ে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত করে তোলো না কেন?’
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের চেয়েও আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বড় নেতা বলে মন্তব্য করেছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। তিনি বাংলাদেশি সাংবাদিক মুসা সাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিব পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর চেয়েও অনেক বড় নেতা। এমনকি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা প্রথম সারির নেতা ছিলেন এবং যাদের নেতৃত্বে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, তাদের সবার চেয়ে শেখ মুজিব অনেক বড় নেতা ছিলেন।’
১৯৭৭ সালে পশ্চিম জার্মানিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ডিট বলেন, ‘ডেথ সেলে বন্দি অবস্থায় শেখ মুজিব যে ম্যাজিক পাওয়ার প্রদর্শন করে একটা জাতিকে স্বাধীন করেছেন, সেটা বিশ্বনেতাদের কাছে অলৌকিক ঘটনার মতো ছিল। বিশ্বনেতারা তাকে এক পলক দেখার জন্য অধীর হয়ে উঠেছিল। এমন অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন একজন বিশ্বনেতাকে তোমরা হত্যা করলে কেন? যাকে ছাড়া বিশ্বনেতারা তোমাদের স্বীকৃতি দিতো না। তার হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববাসী তোমাদের আর বিশ্বাস করে না।’
আচমকা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর শুনে শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো বিশ্ব। এই দুঃসংবাদ শোনার পর ব্রিটিশ এমপি জেমসলামন্ড বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশই শুধু এতিম হয়নি, বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে।’
ব্রিটিশ লর্ড ফেন্যার ব্রোকওয়ে বলেন, ‘শেখ মুজিব জর্জ ওয়াশিংটন, গান্ধী এবং দ্য ভ্যালেরার থেকেও মহান নেতা ছিলেন।’ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী নেতা ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘আপসহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।’
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর পেয়ে ইরাকের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন সেদিন শোক দিবস পালন করেন। এমনকি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কে জি মোস্তফাকে সেদিনই ইরাক থেকে বের করে দেন। সাদ্দাম হোসেন বলছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহিদ। তাই তিনি অমর।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টিকারী যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে নিজের মুগ্ধতার কথা অকপটে বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের তিন দশক পর ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি কমপ্লেক্সে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক মুসা সাদিককে কেনেডি বলেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; খুব পপুলার স্লোগান। আমি যেন কান পাতলে আজও শুনতে পাই।’
পরবর্তীতে, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে তার ধানমন্ডির বাসায় এসেছিলেন এডওয়ার্ড কেনেডি। সেই সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপচারিতার ব্যাপারে কেনেডি বলেছেন, ‘তার (বঙ্গবন্ধুর) ধ্যান-জ্ঞান ছিল বাংলাদেশ ও বিশ্বশান্তি এবং তিনি ছিলেন যুদ্ধবিরোধী ও বর্ণবাদবিরোধী; যার সঙ্গে আমার আদর্শের মিল ছিল।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা হয়েছে, সে ব্যাপারেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এডওয়ার্ড কেনেডি। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই বিশ্ববাসী তোমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তার নামেই বাঙালিকে স্বাধীন জাতির মর্যাদা দিয়েছে। আমি শুধু বলব, পৃথিবীতে দু-শ্রেণির প্রাণী আছে। মনুষ্য প্রাণী ও অমনুষ্য প্রাণী। তোমাদের বাঙালি জাতির ভাগ্য পাল্টাবে কে, যদি তোমাদের মনুষ্য জাতির মধ্যে অমনুষ্য প্রাণীর আধিপত্য প্রবল হয়ে ওঠে। যারা বিশ্বনন্দিত মহামানবসম শেখ মুজিবকে হত্যা করে অহংকার করতে পারে, তারা নরকের কীট।’
বঙ্গবন্ধুর পর তার কন্যা শেখ হাসিনাও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে গরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন। এ অঞ্চলে শান্তি, শৃঙ্খলা, স্থতিশীলতা, নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রতিবেশি এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলো নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেই আস্থার জায়গা হিসেবে মনে করে। বিশেষ করে ভারত, ভারতের অঙ্গরাজ্যসমূহ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকার আস্থা আওয়ামী লীগেই। বিশ্বের অপরাপর দেশ এবং এসব দেশের রাজনৈতিক দল ও নেতাদের কাছেও আওয়ামী লীগ ভরসার স্থল। আর এসব কারণেই বিশ্ব রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে।