বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিভিন্ন সংকট অনুভূত হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী
২৪ জুন ২০২৪ ১৮:৪২
ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুদ্ধকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যাপক মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিভিন্ন সংকট অনুভূত হচ্ছে। এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতির ওপর। তবে মূল্যস্ফীতির কারণে জনগণের বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ দৈনন্দিন জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সরকার সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম, আবদুল লতিফ -এর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জাানান। প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপিত করা হয়। এসময় স্পিকার ড. শিরিন শারমীন সভাপতিত্ব করছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চলমান সংকটের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তা হলো বৈশ্বিক পণ্য বাজারের সরবরাহে অনিশ্চয়তা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি। অর্থনৈতিক এ সংকট কাটিয়ে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মূল কৌশল হবে বিদ্যমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধি করা। সে লক্ষ্যে আমদানি নির্ভর ও কম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যয় বন্ধ রাখা অথবা হ্রাস করা হচ্ছে। নিম্ন অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়নের গতি হ্রাস করা হচ্ছে এবং একই সময়ে উচ্চ ও মধ্যম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এবং Under/Over Invoicing এর বিষয়টি সতর্ক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার প্রতিযোগিতামূলক রাখা হচ্ছে। যে সব পণ্য দেশেই উৎপাদন সম্ভব, সেগুলোর অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে উৎসাহ প্রদান এবং আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে এবং নিম্ন আয়ের মানুষকে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সুরক্ষা দিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের ৫০ লাখ পরিবারকে বছরে কর্মাভাবকালীন ৫ মাস প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সমগ্র বাংলাদেশে নিম্ন আয়ের প্রায় ১ কোটি পরিবারের নিকট টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি চিনি (মজুদ থাকা সাপেক্ষে) এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল বিক্রি করা হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের পরিবর্তে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। এর ফলে উপকারভোগীর NID এবং মোবাইল নম্বরের সমন্বয়ে তথ্য যাচাই করা সম্ভব হবে। মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে।’
সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছি যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লক্ষ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা ছিল।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে
অর্থনেতিক মন্দা ইউক্রেন জাতীয় বাজেট বৈশ্বিক সংকট রাশিয়া সংসদ অধিবেশন