Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উন্নয়ন অংশীদারদের নিয়ে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মশালা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৪ ১৯:৩৮

ঢাকা: ২০২৪-২০২৯ সময়ের পঞ্চবার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরির অংশ হিসেবে উন্নয়ন অংশীদারদের নিয়ে কর্মশালা করেছে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে)। রাজধানী ঢাকার সিক্স সিজনস হোটেলে ২৫ জুন এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএসকে’র মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম গোলাম মরতুজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. সাইদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ও সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নূরুল বাসির ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাইমুল আজম খান।

কর্মশালা পরিচালনা করেন পেশাদার উন্নয়ন সংগঠক, ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফিন্যান্সের সাবেক পরিচালক ড. মো. মোসলেউদ্দিন সাদেক।

ডিএসকের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের ভেতর দিয়ে ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এদেশে ১৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। রাষ্ট্রীয় সংবিধানে সব মানুষের সমঅধিকারের কথা বলা থাকলেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। এসব মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নেই এমনকি মতামত প্রকাশের সুযোগও নেই।’

তিনি বলেন, ‘ডিএসকে কাজ করছে দারিদ্র্যবিমোচন এবং একইসঙ্গে দরিদ্র মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য। ডিএসকের মূল লক্ষ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বনির্ভর ও সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।’ তিনি এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. সাইদুর রহমান বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি জনমানুষের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় অধিকতর মনোনিবেশ করার জন্য ডিএসকের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন শহরে ভাসমান মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব মানুষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পদক্ষেপ না নিতে পারলে শহরাঞ্চল বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠবে।’

তিনি এসব বিষয়ে পরবর্তী পাঁচ বছরে টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ও সমাজসেবা অধিফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নূরুল বাসির বলেন, ‘সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে । সমান্তরাল গতিতে নবীন এবং প্রবীণের আন্তঃসংযোগ ও আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। তাই সময় এসেছে এখন প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসুরক্ষায় লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রতিবন্ধী শিশু ও নারীদের কল্যাণে টেকসই কার্যক্রম গ্রহণ করা এবং এ লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত সহায়তা কর্মী গড়ে তোলা।’

তিনি বলেন, ‘ডিএসকে একটি বিকাশমান সংগঠন। দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের কল্যাণে তারা গত ৩৫ বছর ধরে যে কাজ করে যাচ্ছে, সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরবর্তী পাঁচ বছরে নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বাধীনতার স্বপ্নসাধ পূরণ করতে সক্ষম হবে।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাইমুল আজম খান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের কৃষি জমির মরুকরণ হচ্ছে এবং আমরা আর্থিক, পরিবেশগতসহ নানা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ কম কার্বন নিঃসরণ করেও উন্নত দেশগুলোর অসহিষ্ণু আচরণের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই পরিবেশ সংরক্ষণ, বনায়ন এবং আচরণিক পরিবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলায় লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি তামাক এবং তামাকজাত পণ্যের প্রভাব থেকে দরিদ্র মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে আগামীতে কর্মসূচি গ্রহণের জন্য ডিএসকের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আরো সৃজনশীল কার্যক্রম গ্রহণে সমন্বিত উদ্যোগের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ডিএসকের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম গোলাম মরতুজা ড. মরতুজা বলেন, ‘যে রূপকল্প ও ব্রত নিয়ে ডিএসকে গত ৩৫ বছর ধরে কাজ করছে তা বাস্তবায়নে সংগঠনের সকল স্তরের কর্মীদের অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করতে হবে।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দারিদ্র্য বিমোচন, অসমতা দূরীকরণ ও সামাজিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়চিত্তে অগ্রসর হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

কর্মশালায় সরকারি সংস্থা ও বিভাগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক, পেশাজীবী ও আদিবাসী সংগঠন, তৃণমূল জনসংগঠন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৬০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। তারা ডিএসকে’র পঞ্চবার্ষিক কর্মপরিকল্পনা সমৃদ্ধ করার পরামর্শ দেন।

সারাবাংলা/একে

উন্নয়ন অংশীদার কর্মশালা ডিএসকে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর