Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রেলমন্ত্রী চান ট্রেনে যাত্রী না উঠুক’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৪ ১৮:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ট্রেনের ভাড়ায় দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা বাতিলের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করেছে ‘রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি’। এতে বক্তারা বলেন, রেলমন্ত্রী গোষ্ঠীস্বার্থে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। তাহলে হাজার-হাজার কোটি ব্যয়ে এত রেললাইন ও রেলস্টেশন শুধু লুটপাটের জন্য বানানো হয়েছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন, পাহাড়তলী ও সীতাকুণ্ড স্টেশনে একযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে গণকমিটির নেতারা বলেন, যাত্রীদের রেলভ্রমণে আকৃষ্ট করতে রেয়াতি সুবিধা চালু করা হয়েছিল। এতে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ছাড় পেতেন যাত্রীরা। এ ব্যবস্থায় ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ভাড়ায় কোনো ছাড় পান না যাত্রীরা। তবে ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের ভ্রমণে ভাড়ার ওপর রেয়াতি সুবিধা ছিল ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। ১৯৯২ সালে দূরত্ব ও সেকশনভিত্তিক এ সুবিধা চালু করেছিল রেলওয়ে। কিন্তু গত ৪ মে রেল কর্তৃপক্ষ এ সুবিধা বাতিল করেছে। এর ফলে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ভাড়া বেড়ে গেছে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

রেলমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, রেয়াতি সুবিধা বাতিলের অজুহাত হিসেবে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেছেন, ট্রেনে এখন পর্যাপ্ত যাত্রী ভ্রমণ করেন। এ কারণে নাকি আর রেয়াতি সুবিধার দরকার নেই। রেলমন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে, তিনি বোধহয় ট্রেনে যাত্রী উঠুক সেটা আর চান না। উনার কথায় উনাকে দেশের জনগণের মন্ত্রী মনে হয়নি, একজন ব্যবসায়ী মনে হয়েছে। দেশের মানুষ যখন ট্রেনকে নিজেদের বাহন হিসেবে মনে করছে, তখন রেলমন্ত্রী গোষ্ঠীস্বার্থে মানুষের কাছ থেকে ট্রেনকে দূরে সরিয়ে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন।

বিজ্ঞাপন

‘আমরা রেলমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, সারা দেশে হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এত রেললাইন আর রেলস্টেশন যে করা হলো, সেগুলো কি শুধু লুটপাটের জন্য করা হয়েছে? রেলে যদি যাত্রী না থাকে, তাহলে রেললাইনে দরকার কী, রেলস্টেশনেরও দরকার কী! জনস্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় আমরা রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলে সেটা অযৌক্তিক হবে না,’— বলেন বক্তারা।

তারা আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে দাউদকান্দি উপজেলা হয়ে ট্রেন লাকসাম প্রবেশ করলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বর্তমান দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার থেকে ৯০ কিলোমিটার কমবে। অর্থাৎ এ রুটের দৈর্ঘ্য হবে ২৩১ কিলোমিটার। তার মানে এ অঞ্চলের যাত্রীদেরও বাড়তি ৯০ কিলোমিটারের বাড়তি ভাড়া দিতে হবে না। অথচ রংপুর বিভাগের যাত্রীরা যে নাটোর-চাটমোহর ঘুরে বাড়ির কাছের সিরাজগঞ্জে ফিরে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠেন, সেই কারণে বাড়তি সময় গেলেও বাড়তি ভাড়া দিতে হয় না। এখন বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেললাইন চালু না করে, বাড়তি ১২০ কিলোমিটারের ভাড়ার দায় মেটাতে হবে রংপুর বিভাগের যাত্রীদের।’

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে মানববন্ধনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠক নাহিদ হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, গণতন্ত্র মঞ্চের বিভাগীয় সমন্বয়ক জবিউল হোসেন ও রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য নফিউল ইসলাম।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

রেল যোগাযোগ রেলমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর