Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাকিস্তানে তাপপ্রবাহে মৃত্যু বাড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৪ ১৩:৪৩

দক্ষিণ পাকিস্তানে তীব্র তাপমাত্রায় প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। পাকিস্তানের ইদি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন করাচি শহরের মর্গে ৩০ থেকে ৪০টি মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে।

গত ছয় দিনে তারা অন্তত ৪৬৮টি মৃতদেহ সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে শুধু মঙ্গলবারেই (২৫ জুন) ১৪১টি মৃতদেহ মর্গে নিয়ে যেতে হয়েছে তাদের।

তবে প্রতিটি মৃত্যুর কারণ যে তাপজনিত তা নয়। কিন্তু করাচির তাপমাত্রা গত কয়েক দিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, উচ্চ আর্দ্রতার কারণে লোকজন ৪৯ ডিগ্রির মতো তাপমাত্রা অনুভব করছে। এতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

করাচির সিভিল হাসপাতালে রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ। তাদের মধ্যে ১২ মারা গেছে।

ডা. শেখ বলেন, যারা হাসপাতালে এসেছে তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ বা ৭০ এর কোঠায়। যদিও তাদের মধ্যে ৪৫ এবং এমনকি তাদের ২০ বছর বয়সীরাও আছেন। তাপজনিত কারণে বমি, ডায়রিয়া উচ্চ জ্বরের মতো উপসর্গে ভুগছেন তারা।

তিনি বলেন, আমরা যাদের দেখেছি তাদের অনেকেই বাইরে কাজ করছিল। আমরা তাদের বলেছি যেন প্রচুর পানি পান করে এবং এই উচ্চ তাপমাত্রায় হালকা পোশাক পরে।

জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টায় তাপপ্রবাহ কেন্দ্র এবং ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, শিশুরা কৃত্রিম ঝরনায় খেলা করছে। তারা শীতল হওয়ার চেষ্টা করছে।

তীব্র গরমে ঘেমে অস্বস্তি বোধ করছিলেন মোহাম্মদ ইমরান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমাকে দেখুন। আমার জামাকাপড় পুরোপুরি ঘামে ভিজে গেছে।

ওয়াসিম আহমেদ ৫৬ বছর বয়সী একজন নিরাপত্তা প্রহরী। তিনি নাইট ডিউটি করে থাকেন। তীব্র গরমে ১২ ঘণ্টা ডিউটি করে সকালে বাড়িতে ফিরে তিনি অসুস্থবোধ করছিলেন।

ওয়াসিমের চাচাতো ভাই আদনান জাফর বিবিসিকে বলেন, তিনি ঘরে ঢুকে বললেন, আমি এই গরম আর সহ্য করতে পারছি না। তিনি এক গ্লাস পানি চাইলেন। পানি শেষ করার পরই ঢলে পড়লেন।

ওয়াসিমের পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি ইতোমধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে করাচির বাসিন্দারা লড়াই করছে। কিন্তু নিয়মিত লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। ঘর ঠাণ্ডা রাখতে ফ্যান বা এসির উপর নির্ভরশীল বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ না থাকলে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে ওঠে। পাকিস্তানে এমনিতেই বিদ্যুৎ সংকট লেগে থাকে সারা বছর। এই গরমে লোডশেডিং আরও বেড়েছে।

লোডশেডিংয়ে মুহম্মদ আমিন নামের এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী। তার আত্মীয়দের দাবি, বিদ্যুৎ না থাকায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার পরিবার জানিয়েছে, ৪০ বছর বয়সী মুহম্মদ আমিন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তারপর মারা যান। মৃত্যুর নিশ্চিত কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে তার পরিবারের ধারণা, তাপ সম্পর্কিত কারণে তিনি মারা গেছেন।

এদিকে পাকিস্তানের ডন সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, করাচি শহরের রাস্তায় প্রায় ৩০ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ ডনকে বলেন, অনেকেই সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত। তবে তাদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে তারা তাপ সম্পর্কিত কারণে মারা গেছে।

সারাবাংলা/আইই

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর