বগুড়া কারাগারের কনডেম সেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েদিদের
২৮ জুন ২০২৪ ২৩:১১
বগুড়া: বগুড়া জেলা কারাগারে সেলের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির পালানো ও গ্রেফতারের ঘটনা কারা অধিদফতর দফতরে বড় ধরনের নাড়া দিয়েছে। একারণে দ্রুততম সময়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত অব্যাহত রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সদস্যরা শুক্রবার (২৮ জুন) ছুটির দিনেও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
অপরদিকে, বগুড়া কারাগারের ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের রাখার সেল গুলো সবই খালি করে ফেলা হয়েছে। কারাগারের ওই সেলগুলোতে আর কোনো আসামি বা কয়েদিকে রাখা হচ্ছে না। এ
বগুড়ার কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের জন্য মোট ৯টি সেল রয়েছে। এখন সবগুলো সেলই খালি। এক্ষেত্রে কারা সূত্র জানায়, সেলে ছাদের দুর্বলতা বেরিয়ে আসায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, কারা অধিদফতরের তদন্তে ইতোমধ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকি ও দুর্বলতা থাকার বিষয়টি উঠে এসছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান জানান, কারা নিরাপত্তার ঝুঁকি কি ভাবে হলো, আরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যেতো কিনা এবং নিরাপত্তার দুর্বলতায় কারা দায়ি এসব বিষয়সহ কয়েদির পলায়ন ও পুর্বপর ঘটনাসহ অবকাঠামোগত দিকগুলো খতিয়ে দেখছেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
কারা অধিদফতরের ৩ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি ৫ কার্য দিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করেবেন। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসনের কমিটিতে জেলা কারাগারের কাউকে রাখা হয়নি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল কায়েশের নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে, র্যাব,পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রতিনিধি রয়েছেন।
জেলা কারাগারের জাফলং সেকশনের ২ নং সেলের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ কয়েদি ২৬ জুন রাতে পালানোর পর ভোরে গ্রেফতার হয়। এ ঘটনার পর অতিরিক্ত কারা মহাপরির্দকের নেতত্বে উচ্চ পর্যায়ের কারা কর্মকর্তারা ওই দিন থেকে বগুড়া অবস্থান করে তদন্ত করছেন।
ঘটনার পর কারা কর্মকর্তারা বলছেন, বৃটিশ আমলে তৈরি এই কারাগারের (১৮৮৩ সালে তৈরি) ছাদ দুর্বল ও জীর্ণ ছিলো।
বগুড়া জেলা কারাগার সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঘটনার পর থেকে কারাগারে থাকা জঙ্গি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও কয়েদিদের কনডেমে সেলে রাখা হচ্ছে না।
কারাগারের জাফলং ও আত্রাই সেকশনে মোট ৯টি কনডেম সেল রয়েছে। প্রথমে দুধর্ষ এই কয়েদি-আসামিদের আত্রাই সেলে নেওয়া হলেও এখন তা নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে সবাইকে সেল থকে সরিয়ে একটি ওয়ার্ডে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক জানিয়েছেন, পরবর্তী নির্দেশনায় হয়তো তাদে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হতে পারে।
কারা সূত্র জানায়, জাফলং সেকশনে ৫টি ও আত্রাইয়ে ৪টি কনডেম সেল ছিলো। নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সরিয়ে নেওয়ায় তা খালি হয়ে রয়েছে।
জেলা কারাগারে বর্তমানে ১০ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত (ঘটনার পর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে ৩ জনকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়) ও প্রায় ১৬ জন জঙ্গি রয়েছে বলে কারা সূত্র জানিয়েছে। আর কারাগারের মোট ৭৮৫ বন্দি রাখার ধারণক্ষমতা থাকলে বন্দি রয়েছে ১ হাজার ৭৭০ জন।
সারাবাংলা/এমও