নববধূকে গণধর্ষণ: দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি মানবাধিকার কমিশনের
১ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪১
ঢাকা: রাজধানীর খিলক্ষেতের বনরূপা এলাকায় গত শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে এক নববধূকে আটকে রেখে নির্যাতন ও গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)।
সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ সংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে। এ ঘটনায় করা মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি জানিয়ে আগামী ২৮ জুলাই কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে এই প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
নববধূকে আটকে রেখে নির্যাতন ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলেছে, এ ঘটনায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এর আগে, গত ৩০ জুন দৈনিক সমকালসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে ‘রাজধানীতে নববধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করে।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, রাজধানীর খিলক্ষেতের বনরূপা এলাকায় আটকে রেখে নির্যাতন ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে এক নববিবাহিতা তার স্বামীর সঙ্গে খিলক্ষেতে এক বোনের বাসা থেকে সাভারের উদ্দেশে ফিরছিলেন। এ সময় হঠাৎ বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সামনে ছয়-সাত যুবক গতিরোধ করে তাদের জোরপূর্বক বনরূপা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তরুণীর ওপর চালানো হয় বর্বর নির্যাতন।
ওই তরুণীর স্বামী জানান, ১৮ মে ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের বাসা সাভারে। তার স্ত্রী মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শুক্রবার অফিস থেকে খিলক্ষেত এলাকায় বোনের বাসায় যান ওই নারী। স্বামীও সাভার থেকে খিলক্ষেতে আসেন। বোনের বাসা থেকে বের হয়ে বিমানবন্দর এলাকায় তাদের পূর্বপরিচিত এক ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ছিল। এরই মধ্যে ওই নারী তার স্বামীর কাছে নতুন বিমানবন্দর দেখার আবদার করেন।
এরপর দুজন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। তৃতীয় টার্মিনালের কাছাকাছি এলাকায় প্রথমে চারজন তাদের গতিরোধ করে। এরপর সিএনজি অটোরিকশায় আরও তিনজন এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা খিলক্ষেতে বনরূপা আবাসিক এলাকায় একটি বাগান বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর ওই নারীর স্বামীর মোবাইল ফোনসেট ও নগদ ৫ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। মুক্তিপণ দিয়ে প্রথমে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকায় রফা হয়। এরপর টাকা সংগ্রহের কথা বলে বনরূপা আবাসিক এলাকা থেকে বের হয়ে ভোররাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন ঘটনার শিকার নারীর স্বামী। পুলিশ ঘটনাটি জানার পরপরই সেখানে অভিযান চালায়।
পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি রিফাত রহমান শামীম বলেন, শুক্রবার রাতে ঘটনাটি জানানোর পরপরই অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন দলবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জড়িত একজন ওই তরুণীর পূর্ব পরিচিত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে