Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি খরচে সাশ্রয়ী নীতি অব্যাহত, বন্ধ থাকবে বিদেশ সফর-গাড়ি কেনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:১২

ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের পর বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক অবস্থা মোকাবিলায় কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গত দুই অর্থবছর ধরেই অনুসরণ করে আসছে সরকার। ২০২৪-২৫ তথা নতুন অর্থবছরেও একই নীতি অব্যাহত রাখছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে গাড়ি কেনা, বিদেশ সফরের মতো অনেক খরচই সংকোচন করার কথা বলা হয়েছে। গাড়ির ক্ষেত্রে কেবল ১০ বছরের পুরনো গাড়ি প্রতিস্থাপনের অনুমতি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশের বাইরে কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণও সীমিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার (১ জুলাই) নতুন অর্থবছরের বাজেট কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ-১, অধিশাখা-১ জারি করেছে এক পরিপত্র। এতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কিছু ব্যয় স্থগিত করা কমানো ও বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করার নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে।

পরিচালন বাজেটের অধীন ব্যয়গুলো প্রসঙ্গে পরিপত্রে বলা হয়েছে, সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। পাশাপাশে বিদ্যুৎ, পেট্রোল, অয়েল ও লুবিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক, অনাবাসিক বা অন্যান্য ভবন নির্মাণও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ রকম ভবনের নির্মাণকাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়ে থাকলে তবেই অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বাকি কাজ শেষ করার ব্যয় নির্বাহ করা যাবে।

সব ধরনের যানবাহন (গাড়ি, জাহাজ বা উড়োজাহাজ) কেনার জন্য বরাদ্দ অর্থের খরচ বন্ধ থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পরিপত্রে। তবে পুরনো যানবাহন বদলের কথা জানিয়ে এতে বলা হয়েছে, ১০ বছরের বেশি পুরনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে পরিপত্রে।

উন্নয়ন বাজেটের ক্ষেত্রে ব্যয় কমানো বা স্থগিত রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হযেছে পরিপত্রে। এখানেও পরিচালন বাজেটের মতো বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করতে বলা হয়েছে। এই বাজেটে সব ধরনের যানবাহন কেনাই বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালন করে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। থোক বরাদ্দের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা খাতে থোক বরাদ্দ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির অংশ ব্যয় করা যবে। তবে তার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।

বিদেশে যাওয়া প্রসঙ্গেও বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিপত্রে। বলা হয়েছে, সরকারের টাকায় সব ধরনের বিদেশি ভ্রমণ বা কর্মশালা-সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। তবে অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় সীমিত আকারে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে যথাযধ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে। এ ক্ষেত্রেও কোন কোন শর্তে বিদেশে যাওয়া যাবে, তা উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় বা দেশের দেওয়া স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের আওতায় বিদেশি অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সর জন্য বিদেশে যাওয়া যাবে। বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান বা উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণ ও পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া যাবে।

এ ছাড়া প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বা ফ্যাকটরি অ্যাকসেপ্ট্যান্স টেস্টের জন্য গত ২ জানুয়ারির পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। একান্ত অপরিহার্য বিবেচনা করলে এসব ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণ করতে হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পূর্বানুমোদন নিতে বলা হয়েছে।

২০২২ সালের ১২ মে তারিখেও একই ধরনের ব্যয় সংকোচনের নীতি উল্লেখ করা এক পরিপত্র জারি করেছিল সরকার। তাতে বলা হয়েছিল, কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষাসফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ, কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সেই নির্দেশনা শিথিল করা হয়।

সারাবাংলা/টিআর

অর্থ বিভাগ উন্নয়ন বাজেট কৃচ্ছ্রতাসাধন নীতি টপ নিউজ পরিচালন বাজেট ব্যয় সংকোচন নীতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর