Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেষ হয় না সংস্কার, ‘জল টলমল’ সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:১১

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার লালদহ থেকে জামতলি বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের বর্তমান সময়ের চিত্র। ছবি: সারাবাংলা

বগুড়া: সড়কের দৈর্ঘ্য মাত্র চার কিলোমিটার। সেই সড়কটিই দীর্ঘ দিন ব্যবহারে হয়ে পড়েছিল ব্যবহারের অনুপযোগী। স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় সংস্কারকাজ। কিন্তু সেই চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি তিন মাসেও। সড়কের বুকে এখানে-ওখানে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও রীতমতো জলাশয়। সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে স্থানীয়দের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার লালদহ থেকে জামতলি বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কের দশা ঠিক এমনই। অথচ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নসহ আশপাশের তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের চলাচলের প্রধান সড়কই এটি। সামান্য একটু সড়কের উন্নয়ন কাজ তিন মাসেরও বেশি সময় আটকে থাকায় গোটা উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থাই ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড পায় এই চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ। গত এপ্রিলে ঈদুল ফিতরের সময় শুরু হয় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। তবে সেই কাজে নেই কোনো গতি। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ, শেষ হয়নি আরও অনেক কাজই। সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার পরই যেন সড়কটির দশা আরও বেহাল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের ভাষায় ‘কচ্ছপ গতি’তে চলমান এই কাজের ফলে রাস্তাটি বলা যায় ভেঙে পড়েছে। অধিকাংশ জায়গায় ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। অনেক জায়গাতেই রাস্তার কয়েক ফুট জায়গাজুড়ে তৈরি হয়েছে বিশালাকৃতির গর্ত। এতে সাধারণ মানুষ সড়কটি ব্যবহার করতে গিয়ে পড়ছেন চরম বিপাকে।

বর্ষা মৌসুম শুরু হলে রাস্তাটির অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে বর্ষা মৌসুম আসতে না আসতেই সড়কটির অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ছোট-বড় গর্তগুলোতে এখন সবসময়ই জমে থাকছে পানি। ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে সেসব গর্তগুলো আকারে দিন দিন আরও বাড়ছেই। এখন সড়কটির কোথাও কোথাও অনেকটাজুড়ে জমে থাকছে পানি। এ অবস্থায় সড়কটি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

শোলাগাড়ী গ্রামের অটোচালক আবুল কালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা চালাই। সংস্কার কাজ ধীর গতিতে হওয়ায় রাস্তার অবস্থা এখন ভয়াবহ। আমাদের গাড়ির টায়ারসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। যাত্রীরা এই সড়কে গাড়িতে উঠতে চায় না। রোগীকে নিয়ে পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না।’

সিঙ্গাগাড়ী গ্রামের অটোভ্যানচালক আবু সালাম বলেন, ‘গাড়িতে যাত্রী ওঠা কমে গেছে। গাড়ি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। আমার অটোভ্যানের টায়ার বেশিদিন টিকে না। কিন্তু একটি টায়ার কিনতে অনেক টাকা লাগে। আমরা গরীব মানুষ। এত টাকা পাব কোথায়? রাস্তার কাজ দ্রুত হলে আমাদের সুবিধা হতো।’

সংসারদিঘী গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। টাকা দিয়েও কোনো গাড়ি পাই নাই। কোনো গাড়ির চালক এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে চায় না। রাস্তার মাঝে মাঝে ছোট-বড় নানা আকারের গর্ত, খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আজ রাস্তার এই বেহাল দশা।

রাস্তার সংস্কারকাজের বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সচেতন মহল মনে করছে, দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষের চলাচলে সুবিধা হবে এবং এই দুর্ভোগ লাঘব হবে।

জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মাহমুদ বলেন, ‘এ রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আরও ১৭ দিন সময় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। রাস্তার কাজ দ্রুত করা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

জনদুর্ভোগ বগুড়া শিবগঞ্জ সড়ক সড়ক সংস্কার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর