Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমজমাট ঈদ বাজারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেনাকাটা


১ জুন ২০১৮ ২২:৪০

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: এখনও ঈদের বাকি ১৫ দিন। রমজানের তৃতীয় শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। রমজান শুরুর প্রথম দুই শুক্রবার শপিং সেন্টারগুলোতে তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি। তবে বিপণিবিতানগুলোতে আজ কিছুটা ঈদকেন্দ্রিক কেনাবেচা দেখা যায়। বিক্রেতারা প্রত্যাশা করছেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসে, কেনাকাটার পরিমাণ ততই বেড়ে যায়। ক্রেতাদের পকেটে বোনাসের টাকা আসতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পুরাদমে ঈদের বেচাকেনা শুরু হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ঈদ যত এগিয়ে আসছে ততোই কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে রাজধানীবাসী। এ কারণে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিউমার্কেটে চলে এসেছেন মাসুম আল ফয়সাল। রিকশা থেকে নামতেই ভিড় দেখে ভিমড়ি খেয়ে যান তিনি। মনে করেছিলেন দুপুর থেকে যেহেতু থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে হয়ত মার্কেটে ভিড় একটু কম হবে। কিন্তু নিউমার্কেট এলাকায় ঢুকেই তার ধারণা পাল্টে যায়। ফয়সাল সাহেবের মতো সকলেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদের কেনাকাটা করতে চলে এসেছেন।

বিকালের পর থেকে নীলক্ষেত নিউমার্কেট এলাকায় মানুষের ঢল নামে। মাকের্টের ভেতরে পা ফেলার জায়গায় নেই। চারদিকে মানুষ আর মানুষ। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকে মার্কেটের ভেতরেই অবস্থান করতে থাকেন। এ কারণে ভিড়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শুধু নিউমার্কেটই নয়। গাউছিয়া মার্কেটসহ আশেপাশের ফুটপাতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

শুক্রবার (১ জুন) কেনাকাটায় ক্রেতাদের অন্যতম পছন্দ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর সকলের পোশাক ও পণ্যের আধিক্যের কারণে এই মার্কেটের ভিড় একটু বেশি। শুধু তাই নয় সাশ্রয়ী দামের কারণেও সবশ্রেণির ক্রেতারা এখানে ভিড় জমান।

বিজ্ঞাপন

ঈদের কেনাকাটা ও ঈদ কালেকশন নিয়ে কথা হয় নিউ সুপার মার্কেটের আরিফ ফ্যাশনের কর্ণধার বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, আজ রোজার অর্ধেক। এ সময়তো ভিড় হবেই। তবে দুপুর থেকে বৃষ্টি না হলে আপনি পা রাখার জায়গাও পেতেন না।

এ বারের ঈদের ছেলেদের জন্য কি ধরনের পোশাক বেশি চলছে জানতে চাইলে এ দোকানি বলেন, এবারের ঈদে এখন পর্যন্ত প্রিন্টের শার্টের চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে। গরমের সিজন হওয়ায় সুতি কাপড়ের চাহিদা সব থেকে বেশি।

পাশের দোকান আল মদিনা গার্মেন্টেসের কর্মচারী রনি জানান, এবারের রমজান শুরুর পর থেকে আজই প্রথম এতো ভিড় হয়েছে। দিন যত বাড়বে বেচাকেনা তত জমজমাট হবে। এ মাসের মাত্র আজকে এক তারিখ। চাকরিজীবীরা বেতন পাবেন। তখন মূলত বাজার জমবে। আজ শুক্রবার হওয়ায় অন্যান্য দিনের থেকে ভিড় একটু বেশি। বেচা-কেনাও বেশ ভালো। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে এই ভিড় আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।

আল আমিন টেইলার্সের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর জানান, বৃষ্টি না হলে আজকে উপচেপড়া ভিড় থাকত। সন্ধ্যার পর ভিড় আরও বাড়তে থাকবে। গরমের দিন হওয়ায় অনেকেই রাতে শপিং করতে আসেন। রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত মার্কেটে বেচা-বিক্রি হয় বলেও তিনি জানান।

নারায়ণগঞ্জের ভূঁইগড় থেকে নিউমার্কেটে শপিং করতে এসেছেন, তাছলিমা বেগম।

তিনি জানান, পরিবারের সকলেরই জন্য কিছু না কিছু কেনাকাটা করতে হয়েছে। সেই সকাল থেকে মার্কেটে আছি। এখন বিকাল হয়ে গেছে। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। কষ্ট যা করার এক দিনই করি। প্রতিদিন এতো ভিড় ঠেলে মার্কেটে আসা সম্ভব না।

ছোটদের পোশাকের দোকানে উপচেপড়া ভির থাকলেও জমে উঠেনি শাড়ির দোকানগুলো। শাড়ি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় তুলনামুলক কম ভিড়।

রূপসী শাড়িজ দোকানের কর্ণধার সেলিম মিয়া জানান, শাড়ির বিক্রি অনেক কম। অন্যান্য বছর এই সময়ে যেমন বিক্রি হয়, এবছর এখনও তেমনটি হচ্ছে না। তার উপরে ভ্যাটের মাত্রা বেশি হওয়ায় ব্যবসা তেমন ভালো হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

চম্পা তাঁত সেন্টারের মালিক মাসুদ রানা জানান, এ বছর কমদামি শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামি বা জর্জেট শাড়ির চাহিদা একেবারেই নাই।

এসব মার্কেটের দোকানিরা জানান, এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে জর্জেটের ওপর কাজ করা থ্রি-পিস, বিদেশি পোশাকের মধ্যে ভারতীয় বুটিকস আইটেমের থ্রি-পিস, লন, ভয়েল ও শার্টিনের থ্রি-পিস। এ ছাড়া দেশীয় থ্রি পিসের কাপড়ের মধ্যে প্রিন্টের থ্রি-পিস, ব্লক ও বাটিকের বিভিন্ন ডিজাইন করা থ্রি পিস বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার, গহনা, সেন্ডেল ও ব্যাগ, সেইসঙ্গে প্রসাধনীও ধুমছে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে নিউমার্কেট এলাকার ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে এসব এলাকার জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি ১০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। সারাক্ষণ পুরো এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া যে কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে।

ক্রেতা সাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাত মুক্ত রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।

সারাবাংলা/এডেজকে/এমএইচ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর