‘কোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই’
৭ জুলাই ২০২৪ ১৫:৩০
ঢাকা: কোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, সমাধান হাইকোর্ট থেকেই আসতে হবে।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে গণভবনে যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, হাইকোর্টের রায়, এর বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা, এটা তো সাবজুডিস (বিচারাধীন বিষয়), আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এভাবে কথা বলতে পারি না।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট রায় দিলে সেখানে (সমাধানও) হাইকোর্ট থেকে আবার আসতে হবে। কিন্তু আজ আন্দোলনের নামে যা করা হচ্ছে, তা পড়াশোনার সময় নষ্ট করা। এর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের রায় আমরা সবসময় মেনে নিই। কিন্তু আমরা দেখলাম এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।
ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সেখানে মেয়েরাও আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, এখানে আমার একটা প্রশ্ন, যারা এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিল, তারা কতজন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল, আর কতজন পাস করেছিল সেটা বের করা দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা কিন্তু একবার বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলটা কী? পাবলিক সার্ভিস কমিশনের হিসাব দেখলে দেখা যাবে যে, আগে কোটা থাকতে মেয়েরা যে পরিমাণ সুযোগ পেত, সে পরিমাণ সুযোগ কিন্তু এ কয় বছরে আর পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চল, সেসব অঞ্চলের মানুষ কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরি পাচ্ছে না। এ রকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করেন, হাইকোর্ট একটা রায় দেন।
এদিন ঢাকা সেনানিবাসে ‘প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট’ (পিজিআর)-এর ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জীবনটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আর যারা আমার নিরাপত্তা দেন, তারাও যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে থাকেন।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য পিজিআরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পিজিআরের নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবি রাখে।
ফোর্সেস গোল-২০৩০ ধাপে-ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, পিজিআরের এখন এপিসিসহ আধুনিক সরঞ্জাম যোগ করা হয়েছে। এর অপারেশনাল দক্ষতা বাড়াতে সরঞ্জামাদি যেমন বেড়েছে; তেমনি এই রেজিমেন্টের সদস্যসংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করে না বাংলাদেশ। এ দেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতির পানে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সম্পদ বিক্রি করে কখনও ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করিনি৷ বড় দেশ আমেরিকা, তাদের কোম্পানি গ্যাস তুলে বিক্রি করবে ভারতের কাছে। আমি রাজি হইনি। এ জন্য ক্ষমতায় আসতে পারিনি। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় বসতে হবে–এই দুর্বলতা কখনও আমার মধ্যে ছিল না।
সরকারের টানা মেয়াদে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নচিত্রের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খবরদারি করা বড় দেশগুলোও এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অস্বীকার করতে পারে না। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমেরিকার চেয়ে এক পার্সেন্ট হলেও দারিদ্র্যের হার কমাতে হবে দেশে।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ