চামড়া সংরক্ষণে প্রান্তিক পর্যায়ে হিমাগার চান ব্যবসায়ীরা
৭ জুলাই ২০২৪ ১৬:৩৬
ঢাকা: কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পচন রোধে নাটোর, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ প্রান্তিক আড়ত পর্যায়ে স্টোরেজ সুবিধা চান কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা। তারা জানান, বিভিন্ন অঞ্চলে অব্যবহৃত স্টোরেজ আধুনিকায়নের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে চামড়া সংরক্ষণ সংকট দূর করা সম্ভব। এতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কোরবানির পশুর চামড়া নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পাবে। রক্ষা পাবে দেশের সম্পদ।
শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে এফবিসিসিআই’র মতিঝিল কার্যালয়ে আয়োজিত হাইড অ্যান্ড স্কিন, লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড আর্টিফিসিয়াল লেদার বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব কথা উঠে আসে। রোববার (৭ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক শাহীন আহমেদ। কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। তিনি বলেন, ‘কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সরকারকে প্রতি জেলায় স্টোরেজ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। প্রয়োজনে এই উদ্যোগে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা যেতে পারে। পাশাপাশি, চামড়া শিল্পের শতভাগ কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করতে হবে। শুধু রফতানি বাজারের জন্য নয়, নিজেদের জন্য পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রেও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে।’
এ সময় চামড়া শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেন মো. আমিন হেলালী।
কম্প্লায়েন্স বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে স্থানান্তর করে সাভারে স্থাপন করা হয়েছে চামড়া শিল্পপল্লী। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও সেখানে সিইটিপি বা কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। দুর্বলতা রয়েছে কঠিন বর্জ্য (সলিড ওয়েস্ট) ব্যবস্থাপনায়ও। যা আন্তর্জাতিক পরিবেশগত ছাড়পত্র (লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট) পাওয়ার পেছনে বড় বাধা। স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধিতে এটিই অন্যতম প্রতিবন্ধকতা।’
কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চামড়া শিল্পের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ওপর জোর দেন কমিটির চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। রফতানি বৃদ্ধিতে চীনসহ পার্শ্ববর্তী দেশে চামড়া রফতানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সভার মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়নের ব্যবস্থা, ডিজাইনারসহ দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী তৈরি, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, পাদুকা শিল্প পল্লী স্থাপন, আধুনিক স্লটারিং হাউজ স্থাপন, দেশে প্রচলিত ছুরি ও যন্ত্রপাতি উন্নয়ন এবং কসাইদের প্রশিক্ষণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের জন্য কমন ডিসপ্লে সেন্টার স্থাপন, লেদার টেকনোলজি বিষয়ে শর্ট ডিপ্লোমা কোর্স এবং উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা, হাইড অ্যান্ড স্কিন ব্যবসায়ীদের বকেয়া পাওয়া পরিশোধ, সাভার চামড়া শিল্প নগরীর পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রাপ্তির কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, চামড়া শিল্প ব্যবস্থাপনা আইন বিষয়ক জাতীয় কমিটিতে খাতের অংশীজনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, আজিজুল হক, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো. আলমগীর, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে