আগারগাঁওয়েও শেকৃবির কোটাবিরোধীদের সড়ক অবরোধ
৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:১৩
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। পরে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আগারগাঁও মোড় অবরোধ করে রাখেন।
রোববার (৭ জুলাই) বিকেল টার দিকে শেকৃবি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে মিছিল করতে করতে আগারগাঁও আট রাস্তার মোড়ের দিকে যান তারা। পরে শেকৃবির কয়েক শ শিক্ষার্থী
আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেন।
আগারগাঁও মোড় থেকে মিরপুর-ফার্মগেট ও মহাখালী-শিশুমেলা সড়ক দুই ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এতে এই দুই রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কের উভয় দিকেই তীব্র যানজট দেখা দেয়। বিকেল ৫টার পরে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।
আরও পড়ুন-
- দ্বিমুখী আন্দোলনে অচল শেকৃবি
- চট্টগ্রামে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু
- তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীতে
- কোটাবিরোধীদের ‘বাংলা ব্লকেডে’ স্থবির ঢাকা
- অবরুদ্ধ শাহবাগ— কোটা বাতিল চান শিক্ষার্থীরা
- কোটা পুনর্বহালে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ৪ দফা দাবি
- টানা ৩য় দিনের আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা, সড়ক অবরোধ
- কোটা বাতিলের দাবিতে সায়েন্সল্যাব অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা
- শুনানি নেননি আপিল বিভাগ, কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল
- অবরুদ্ধ শাহবাগ— হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালে আদেশ বাতিলের দাবি
শিক্ষার্থীদের দাবি, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল তা বহাল রাখা এবং কমিশন গঠনের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিয়ে সংবিধান অনুযায়ী কেবল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় নিয়ে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা।
অবরোধকালীন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে কোটা প্রথার বিরোধিতা করেন। ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক, কোটা প্রথা নিপাত যাক’, ‘যুদ্ধ হবে আরেকবার, করব কোটা সংস্কার’, ‘কোটা বৈষম্য দূর করো, নইলে বুকে গুলি করো’, ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না’সহ নানা স্লোগানে শিক্ষার্থীরা গোটা এলাকা মুখরিত করে রাখেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অবরোধের সময়গুলোতে আমরা উপস্থিত ছিলাম। মানুষের দুর্ভোগ ও বিশৃঙ্খলা যেন না হয় সেজন্য বারবার অনুরোধ করেছি।’
এ সময় ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইমরান হোসেনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। পরে এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই পরিপত্রের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা অংশটি বাতিল করে দেন। ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল হয়।
গত ৫ জুন হাইকোর্টের এ রায়ের পর থেকেই ফের আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ১ জুলাই থেকে তারা টানা বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সেদিন শুনানি নেননি আপিল বিভাগ। এর ফলে হাইকোর্টের ওই রায় তথা মুক্তিযোদ্ধা কোটাও বহাল রয়েছে।
এরই প্রতিবাদে আজ রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির মাধ্যমে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিল কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজ, ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই এ দিন এই কর্মসূচি পালন করছেন। এতে তীব্র যানজটে ঢাকা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।
সারাবাংলা/টিআর
কোটাবিরোধী আন্দোলন শেকৃবি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক অবরোধ