সিলেট সিটি নির্বাচন: নিজ দলেই চ্যালেঞ্জের মুখে আরিফ-কামরান
২ জুন ২০১৮ ০৯:০০
।। বিলকিস আক্তার সুমি, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট ।।
সিলেট: নির্বাচনের আগেই নিজ নিজ দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে শক্ত প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে। দলের ভেতরেই এই লড়াইয়ে তারা সঙ্গে পাচ্ছেন না কাউকেই। তবে আশার কথা এই যে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে পারলেই নির্বাচনি মাঠে নেতাকর্মীদের বিশাল বহর সঙ্গে পাবেন তারা।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী। নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের অন্যতম দাবিদার হয়ে মাঠে রয়েছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে তিনি বিএনপির সমর্থন নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। তবে, গত নির্বাচনে দলের অভ্যন্তরে আরিফকে পাড়ি দিতে হয়েছিল বন্ধুর পথ। এবারও তার ব্যতিক্রম নেই। তাকে নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা ক্ষোভ থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা রয়েছে তার উপরই।
এছাড়া এবার সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চান মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। নির্বাচনের টার্গেট নিয়ে মাঠপর্যায়ে সিলেটে বিএনপিকে শক্তিশালী করেছেন তিনি। নাসিম হোসাইন জানান, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি গতবার আরিফকে ছাড় দিয়েছিলেন। এবার তিনি প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
অন্যদিকে, গত ১৩ মে সিলেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। পাশাপাশি প্রার্থী হওয়ার জন্য তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামান।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিএনপির কর্মী। বিএনপি থেকে আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা রাখি। আর দলের দুর্দিনে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাই এক সঙ্গে ভোটের মাঠে কাজ করবো। এখন দলের ভেতরে কোনো বিভক্তিও নেই।’
আরিফের মতো নিজ দলেও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। গত নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলেও ভোটের মাঠ ছাড়েননি। দলের ভেতর ও বাইরে রয়েছে তার জনপ্রিয়তা। তবে মনোনয়ন পেতে দলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের সঙ্গে কঠিন লড়াই করতে হবে তাকে।
সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা আসাদউদ্দিন আহমদ। তাকে সমর্থন দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের একাংশ। আসাদ জানিয়েছেন, তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন এবং নির্বাচনে নৌকার জয় দেখতে হলে তার প্রয়োজন রয়েছে।
আসাদ ছাড়াও অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম এবার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন চান। তিনিও মাঠে কাজ করছেন।
এসব নিয়ে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান জানান, তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী। গেলো নির্বাচনে পরাজিত হলেও জনগণের সঙ্গ ছাড়েননি বরং নগরবাসীর সঙ্গে থেকে ছায়ার মতো কাজ করেছেন। ইতিমধ্যে তাকে বেশ কয়েকবার গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে। তিনি মনোনয়ন পেলে অবশ্যই আওয়ামী লীগ এ সিটিতে হারানো সিংহাসন পুনরুদ্ধার করতে পারবে।
সারাবাংলা/এমও