অভিযানে ধরা, জরিমানায় ছাড়া— বন্ধ হয় না পৌরসভায় গবাদিপশু চরা
৮ জুলাই ২০২৪ ১০:৪১
রাঙ্গামাটি: আবারও পর্যটন জেলা রাঙ্গামাটি শহরে অবাধে বিচরণ করা মালিকানাধীন গবাদিপশু ধরার অভিযান দিয়েছে রাঙ্গামাটি পৌরসভা। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া অভিযানে রাঙ্গামাটি জেলা শহরের পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়সংলগ্ন এলাকা, শহিদ মিনার ও কলেজগেইট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৪ গবাদিপশু (গরু) ধরেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। যদিও অভিযানে ধরা এসব গবাদিপশু পূর্বের মতো মালিকের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের পর হস্তান্তর করা হবে জানিয়েছে পৌরসভা সূত্র।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিগত কয়েকবছর যাবৎ দু-এক মাস পরপর রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার সড়কে অবাধে চরে বেড়ানো ‘গবাদিপশুর বিরুদ্ধে’ অভিযানে নামছে পৌরসভা। বিভিন্ন সময়ে অভিযানে ধরা গবাদিপশু নামমাত্র জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়ার কারণে ফের এসব গবাদিপশু সড়কে ছেড়ে দেয় মালিকরা। এতে করে ঘুরেফিরে একইভাবে সড়কে নামছে এসব গবাদিপশু।
এসব গবাদিপশু যততত্র অবাধে বিচরণ ও ডাস্টবিনের ময়লা উলটপালট, সড়কে মলত্যাগের কারণে পর্যটন শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া গরুর গোবরে সড়কে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে ঝুঁকি রয়েছে। পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি ভ্রমণে আসা পর্যটকরাও নিচ্ছেন বিরূপ অভিজ্ঞতা।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর দোলন বড়ুয়া সারাবাংলাকে জানান, রোববার এসপি অফিসসংলগ্ন এলাকা, শহিদ মিনার এলাকায় ১২ ও কলেজগেইট এলাকা থেকে দু’টি অবাধে বিচরণ করা গরু ধরা হয়েছে। আপাতত সেগুলো আমাদের খোঁয়াড়ে রাখা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সভাপতি মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিগত কয়েকবছর ধরেই অবাধে বিচরণ করা গবাদিপশু ধরা হচ্ছে, আবার জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে একই গবাদিপশু ঘুরেফিরে শহরে অবাধে বিচরণ করছে শহরের পরিবেশ দূষণ করছে। ডাস্টবিনের ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলার কারণে দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। এটা স্থানীয় ও পর্যটনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার। বারবার একই ভুল বা অপরাধ করলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
এ ব্যাপারে একাধিকবার কল দিয়েও রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে প্যানেল মেয়র মো. হেলাল উদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পৌরসভা এলাকায় কয়েকটি স্থায়ী খোঁয়াড় তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু এ ব্যাপারে আনসার ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তেমন কোনো আগ্রহ না পাওয়ায় সেই উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘শহরে অবাধে বিচরণ করা গবাদিপশু ধরা, এটা পৌরসভারই কাজ। বিভিন্ন সময়ে ধরছে এবং জরিমানাও করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পৌর মেয়রকেও আমরা বিভিন্ন সময়ে বলে আসছি। গরুর মালিকদের সঙ্গেও আমরা বসেছি। যেহেতু এগুলা মালিকানাধীন পশু; অবাধে রাস্তাঘাটে বিচরণ করতে পারে না। আমরা পৌরসভাকে এ বিষয়ে সব ধরণের সহায়তার কথাও জানিয়েছি।’
সারাবাংলা/এমও