সবদিকেই এগিয়ে মোংলা বন্দর, বেড়েছে আমদানি-রফতানি
৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৪
খুলনা: আমদানি-রফতানির সব খাতেই গত বছরের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মোংলা বন্দর। মোংলা বন্দর খুলনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শিল্প কারখানা, সম্প্রসারিত হয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে এ বন্দরটি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২৭টি জাহাজ এসেছিল অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮৪৬টি জাহাজ এসেছে অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছরের মোট ১৯ টি জাহাজ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪০টি অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৬ টি জাহাজ বেশি এসেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট গাড়ি আমদানি হয়েছিল ১৩ হাজার ৫৭৬টি অন্যদিকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ৩৪০ টি গাড়ি আমদানি হয়েছে অর্থাৎ এ বছরে ১ হাজার ৭৬৪ টি গাড়ি বেশি আমদানি হয়েছে। গত ১০ বছরে এ বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত গাড়ির সংখ্যা ১ কোটি সাত লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৯টি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৯ দশমিক ০৫ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০৮ দশমিক ৬৮ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। ২৬ হাজার ৫৮৩ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৩১ হাজার ৪৪ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৩০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৩১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে । পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরের অর্জিত রাজস্ব আয় ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এ বন্দর দিয়ে ৮৪৬ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয় ১৫ হাজার ৩৪০ ইউনিট। এ সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিংও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল সূচক পজিটিভ ধারায় থাকার ফলে বন্দরে নিট মুনাফা ২৮.৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের মহাকর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এ বন্দর থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও তার পার্শ্ববতী জেলা থেকে পণ্য আনা নেওয়া করার ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহারকারীদের সময় এবং অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে রাজধানীর সব থেকে কাছের বন্দর হওয়ায় মোংলা হয়ে পোশাকশিল্পের বিভিন্ন পণ্যও যাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপন করায় পণ্য আমদানি-রফতানিতে নবদিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে। মোংলা বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিং দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় বিদেশি ব্যবসায়ীরাও এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ফলে এই বন্দর দিয়ে এখন পণ্য আমদানি-রফতানি বেড়ে চলেছে। পণ্যগুলোকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে আমদানি-রফতানি করার ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরও সার্বিক দিক দিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া মোংলা বন্দরে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কাজ চলমান রয়েছে।’
সারাবাংলা/একে