বৈষম্যমূলক সব কোটা বাতিলের দাবিতে রাবিতে মশাল মিছিল
১০ জুলাই ২০২৪ ২৩:২৬
পৌষ্য কোটাসহ বৈষম্যমূলক সব ধরনের কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত ক্রিয়াশীল সংগঠন।
বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে মিছিল পরবর্তী সমাবেশে মিলিত হন আন্দোলনকারীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে আন্দোলনকারীরা নারী, প্রতিবন্ধী, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ছাড়া বাকি সব কোটা বাতিলের দাবি জানান। এ সময় ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করো, করতে হবে করতে হবে’, ‘পৌষ্য কোটা বাতিল করো, করতে হবে করতে হবে’, ‘কোটা না সমতা, সমতা সমতা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, আমরা এমন একটি দেশে বাস করি যেখানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এত বেকার থাকা সত্বেও ১০০টি চাকরির মধ্যে যখন ৩০টি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-নাতিদের দিয়ে দেওয়া হয়, যাদের সংখ্যা দেশের জনসংখ্যার ১ শতাংশও নয়, তখনই বিরাট বৈষম্য তৈরি হয়। পোষ্য কোটা একটি তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মতো বিষয়। আমরা এ পোষ্য কোটার বিরোধিতা করছি। সংখ্যালঘু জাতিসত্তা, নারী, প্রতিবন্ধী, ও অনুন্নত জনপদ কোটা ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটাসহ বৈষম্যমূলক সব কোটা বাতিল চাই।
সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন, এই আন্দোলনে কোটা সংস্কার খুবই জরুরি। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে নারীরা আছেন, এখনো গ্রামীণ সংস্কৃতির কারণে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। এখনো রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। তাই আমি মনে করি নারীদের জন্য ন্যূনতম কোটা থাকা যৌক্তিক। এ ছাড়া অনগ্রসর যেসব জাতিসত্তা আছে, যেমন— সাঁওতাল, গারো, চাকমা, ত্রিপুরা— তারা এখনো আমাদের মূল জনপদের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সমান তালে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। সুতরাং এই বহুবৈচিত্র্যের বাংলাদেশে সমতা নিশ্চিতের জন্য এসব ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নারীদের জন্য ন্যূনতম কোটা রাখা দরকার বলে আমি মনে করি।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শামিন ত্রিপুরা বলেন, কোটা সংস্কারের এই আন্দোলনকে আমি সাধুবাদ জানাই। ২০১৮ সালে সরকার সব ধরনের কোটা বাতিল করে দেয়। এর ফলে আমরা আরও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এমনিতেই পাহাড়িরা বিভিন্ন দিক দিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেয়ে পিছিয়ে আছে। আমাদের মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্য ভাষাতে গিয়ে পড়ালেখাসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। যতদিন আমরা সমতায় না আসতে পারি আমাদের জন্য কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা যৌক্তিক।
প্রতিবাদ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার আলিফ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র গণমঞ্চ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।
সারাবাংলা/টিআর
কোটা আন্দোলন কোটাবিরোধী আন্দোলন রাজশাহী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাবি