‘জনগণ বনাম শিক্ষার্থী’—এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে আন্দোলন: ছাত্রলীগ
১১ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৮
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে এই পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তারা মনে করেন, ‘সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী’—এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে আন্দোলনটি। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সংগঠনটি কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধানের পথে হাঁটার আহ্বান জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানায় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
জনদুর্ভোগ তৈরি না করে যৌক্তিক সমাধানের পথে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান সংগঠনটির দুই শীর্ষ নেতা সাদ্দাম হোসেন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত রাখা, জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা এবং কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধানের দাবিতে’ দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সংবাদ সম্মেলন শুরু করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে সরকারি চাকরিতে চলতি সময়ে আর কোনো কোটাব্যবস্থা প্রচলিত নেই। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে কোটাব্যবস্থা তুলে দেওয়ায় নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়। যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কোটা উঠে যাওয়ার পর উন্নয়নের মূলধারা থেকে নারীরা ছিটকে পড়েছেন।
চলমান আন্দোলনের একটি স্লোগান ‘কোটা না মেধা’—নিয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষাতে একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয়। তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় ও সংবিধানসম্মত।
চলমান আন্দোলন নিয়ে পুনর্ভাবনার প্রয়োজন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় সম্পদ (যেমন তেল, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন) দুরূহ হয়ে উঠছে। কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে যাচ্ছে। আন্দোলন-আন্দোলন খেলা ও এমন অবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুনঃভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।’
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেন সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী—এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে।’
সারাবাংলা/আরআইআর/একে