রাজধানীতে ৩ ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি
১২ জুলাই ২০২৪ ১৩:২৭
ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ‘আজ সারা দিন কম-বেশি বৃষ্টি হবে। তবে আগামীকাল থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসলে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা একটু বেড়ে যাবে। সামনের সপ্তাহে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তি থাকবে। এতে করে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে।’
ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থেমে থেমে চলছে। এই বৃষ্টিতে ঢাকার অনেক এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। বিশেষ করে নিচু এলাকায় ড্রেন ভরে উপচে পানি জমেছে রাস্তায়।
বৃষ্টিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমি এলাকা, বঙ্গবাজার, কারওয়ান বাজার, শাহজাহানপুর, মালিবাগ রেলগেট, মৌচাক, মগবাজার, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনি পাড়া, ধানমন্ডিসহ, পশ্চিম শ্যাওড়াপাড়ার বর্ডারবাজার, কুড়িল বিশ্বরোড, দক্ষিণ মনিপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে।
সকাল ৯টা থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে অনেকে বাসা থেকে বের হতে পারেননি। কেউ কেউ বের হলেও সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় বিপাকে পড়েন।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের প্রবণতা রোববার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বর্ধিত ৫ দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
বৃষ্টির এই পূর্বাভাস গতকাল থেকেই ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল বলেছে, মৌসুমি বায়ু আবারও শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বৃষ্টি বেড়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর মেঘ দেশের উপকূল দিয়ে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল দিয়ে মেঘ বেশি আসছে। সিলেটসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় বাধা পেয়ে বৃষ্টি বাড়িয়ে দিয়েছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পাহাড়ধসের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের নিচে ও আশপাশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরেছে কক্সবাজারে। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার ভারী বৃষ্টি পাহাড়ধসের বিপদ বাড়িয়ে দিয়েছে। সিলেটে ও এর উজানের ভারী বৃষ্টি নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে। ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টির কারণে অন্তত পাঁচটি এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশু মিলিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সিলেটে আবার ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সংস্থাটি থেকে বৃহস্পতি ও আজ শুক্রবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পানি সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়তে পারে।
সারাবাংলা/একে