ভারতে পালানোর সময় সন্ত্রাসী মনা হত্যার ৪ আসামি গ্রেফতার
১২ জুলাই ২০২৪ ১৯:৪৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে খুনের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে নগরীর চেরাগী পাহাড়ে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী চৈঠপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার চারজন হলেন- মো. জুয়েল (৩৪), মো. বশির (২৬), মো. সাগর (২৮) ও মো. জুয়েল ওরফে ছোট জুয়েল (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ৭ জুলাই (রোববার) রাতে সাহেদ হোসেন মনা নামে একজন ছুরিকাঘাতে খুন হন। সাহেদের নামে অস্ত্র, ডাকাতি ও দ্রুত বিচার আইনে ১০টির মতো মামলা আছে।
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গ্রেফতার জুয়েলের সঙ্গে সাহেদের মনোমালিন্য হয়। এর জেরেই জুয়েল তার সহযোগীদের নিয়ে সাহেদকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। পরে সাহেদের মৃত্যু হয়।
উপ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর তারা চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের চারজনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
কোতোয়ালি জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) অতনু চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘রিয়াজউদ্দিন বাজার ও নিউমার্কেট এলাকায় হকারদের থেকে চাঁদা, ছিনতাই ও মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন খুনের শিকার সাহেদ। ৫০টিরও বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা সে ঘটিয়েছে বলেও আমাদের কাছে তথ্য আছে।’
‘কিশোর গ্যাংও নিয়ন্ত্রণ করতো সে। কোতায়ালি থানা পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায়ও তার নাম আছে।’
২০২৩ সালের ৯ জুলাই দিনের বেলা প্রকাশ্যে নগরীর কোতোয়ালি থানার রিয়াজ উদ্দিন বাজার এলাকার রয়েল টাওয়ারের সামনে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এক নম্বর আসামি সাহেদ।
এসি অতনু চক্রবর্তী বলেন, ‘সাহেদের গ্রুপে জুয়েলও কাজ করতেন। পরে সাহেদের সঙ্গে জুয়েলের বিরোধ হলে দুইটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়। বিরোধের জেরেই জুয়েল তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সাহেদের ওপর হামলা করে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে রক্ষা করতেই সাহেদকে ছুরিকাঘাত করে বলে সে আমাদের জানিয়েছে। তারা সেখানে সাহেদকে শায়েস্তা করতে গিয়েছিল।’
‘সাহেদকে খুনের পর তারা প্রথমে ঢাকা চলে যায়। সেখান থেকে এক দালালের মাধ্যমে তারা অবৈধভাবে ভারতে চলে যাবার চেষ্টা করছিল। খুনের ঘটনায় প্রথমে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বাকিদের গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যহত আছে।’
গত ৭ জুলাই রাতে কোতোয়ালি থানার স্টেশন রোড পাখি গলিতে ছুরিকাঘাতে খুন হন সাহেদ হোসেন মনা। খুনের ঘটনায় আটজনের নাম জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নামে থানায় মামলা করেছিলেন সাহেদের বাবা শাহ আলম।
সারাবাংলা/আইসি/এনইউ