চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাবস্থা থাকার পরও হরিজনদের উচ্ছেদ নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অপতৎপরতার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
সমাবেশে পরিষদের নেতারা বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে ভারতের তেলেগু এলাকা থেকে এনে বংশালে হরিজনদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শত বছরেরও বেশিসময় ধরে হরিজনরা সেখানে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন হরিজন কলোনির একাংশে একটি কাঁচাবাজার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। গত মাসে সিটি করপোরেশনের লোকজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযান চালায়।’
‘উচ্ছেদ ঠেকাতে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন রাস্তায় নেমে আসে। প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন কারও মতামতের তোয়াক্কা না করে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। এ অবস্থায় উচ্ছেদ ঠেকাতে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা আদালতে যান। হাইকোর্ট উচ্ছেদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন, যেটা আপিল বিভাগও বহাল রেখেছেন।’
পরিষদের নেতারা আরও বলেন, ‘কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশেরও তোয়াক্কা করছে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গত বৃহস্পতিবার হরিজন কলোনিতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে অমানবিক হামলা করেছেন কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন। অনেকে রক্তাক্ত হয়েছেন, অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা এ হামলার প্রতিবাদ জানাই। আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, কাউন্সিলর আউয়ালকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সিটি করপোরেশন আদালতের আদেশ না মেনে যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের ভূমিকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। সিটি করপোরেশনকে ঘোষণা দিয়ে হরিজনদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।’
ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগর যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি রুবেল পালের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নিতাই প্রসাদ ঘোষ, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, লীলারাজ গৌর দাস, চসিক কাউন্সিলর নিলু নাগ, অলক দাশ, সুচিত্রা গুহ টুম্পা এবং হরিজন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বাদল চন্দ্র দাশ, দিলীপ প্রসাদ দাশ, বিষ্ণু দাশ ও ওমপ্রকাশ দাশ।
সমাবেশ শেষে ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘোরে।