নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা আতিকের অবস্থান জানানোর নির্দেশ
১৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:২১
ঢাকা: নিখোঁজ জাতীয়বাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি আতিকুর রহমানের (রাসেল) অবস্থান জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) অবিলম্বে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আতিকের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে, ১০ জুলাই আতিকুরের সন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস (স্বশরীরে হাজির করা) আইনে আতিকুরের বাবা মো. আবুল হোসাইন সরদার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
পরে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, মো. আতিকুর রহমানের (৩৫) নিখোঁজের ঘটনায় গত ২ জুলাই লালবাগ থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়। এরপরও আতিকুর কোন সন্ধান না পেয়ে হেবিয়াস কর্পাস (স্বশরীরে হাজির কর) আইনে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত আতিকের অবস্থান জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) অবিলম্বে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আতিকের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৯ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘আট দিন ধরে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা আতিক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আট দিন আগে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমানের (রাসেল) খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনো। তার পরিবার সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ, হাসপাতাল, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা—সব জায়গায় খোঁজ নিয়েছে। কোথাও তার হদিস নেই। তবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেছেন, আতিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। তিনি গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন।
রাজধানীর পুরান ঢাকার আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে ১ জুলাই আতিকুর রহমান নিখোঁজ হন। গত আট দিনে আতিকের সন্ধানে তার বাবা, দুই বোন পাগলপ্রায়। নিখোঁজ আতিকুর রহমান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি। হঠাৎ করে কেন তার এই নিরুদ্দেশ, তা নিয়ে সংগঠনে চলছে নানা আলোচনা।
আতিকুর রহমানের বোন তানিয়া আক্তার বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার দিন সন্ধ্যা ৬টায় ভাইয়ার সঙ্গে বাবার শেষ কথা হয়। আমার বাসায় আসার কথা ছিল ভাইয়ার। আসতে দেরি হওয়ায় বাবা ফোন দেওয়ার পর দেখা যায় ফোন বন্ধ। আর কোনো খবর নেই। গত তিন দিন হঠাৎ হঠাৎ তার ফোন অনলাইনে দেখা যায়। অনেকবার ফোন করে ও মেসেজ পাঠিয়েও কোনো রেসপন্স নেই।’
আতিকুর রহমানের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নে। তিনি রাজধানীর লালবাগে একটি ভাড়া বাসায় মেস করে থাকতেন। তার দুই বোনও ঢাকায় থাকেন। আতিকের মা নেই। আতিক নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন মেয়ের বাসায় এসেছিলেন বাবা মো. আবুল হোসেন সরদার। কিন্তু ঢাকায় এসে ছেলের দেখা পাননি। ছেলের সন্ধান চেয়ে আবুল হোসেন সরদার রাজধানীর লালবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পর থেকে তিনি ছেলেকে খুঁজে পেতে থানা-পুলিশ, হাসপাতাল, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ