Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হলে ফিরছেন শিক্ষার্থীরা, ফাঁকা হচ্ছে টিএসসি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুলাই ২০২৪ ০১:৫৩

মধ্যরাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা টিএসসিতে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও স্লোগান নিয়ে মিছিল করা পর ফের হলে ফিরতে শুরু করেছেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা তারা ঢাবির টিএসসি মোড়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

রোববার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতে শুরু করেন টিএসসি থেকে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মধুর ক্যানটিন এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ক্যাম্পাসের শাহবাগ ও নীলক্ষেত প্রান্তে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে না তো কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে? এটি দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন।’

আরও পড়ুন- কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মধ্যরাতে উত্তাল ঢাবি

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছিলেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টার পর তারা রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করেন।

‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান নিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হল থেকে নেমে আসেন। হল গেট থেকে মিছিল নিয়ে তারা রওয়ানা দেন টিএসসি অভিমুখে। ঢাবির মেয়ে শিক্ষার্থীদের চারটি হল থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিক্ষার্থী মধ্যরাতে মিছিল নিয়ে জড়ো হন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।

রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা টিএসসি মোড় অবরোধ করে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় মধুর ক্যানটিনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শাহবাগ-নীলক্ষেত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সতর্ক অবস্থানে। সাঁজোয়া যানও দেখা গেছে এ সময়।

পরে রাত দেড়টার দিকে ফাঁকা হতে শুরু করে টিএসসি মোড়। শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ হলের দিকে ফিরতে থাকেন।

আরও পড়ুন- মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতির বদলে কি রাজাকারের নাতি-পুতি চাকরি পাবে?

এর আগে শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল ১১টা থেকে বঙ্গভবন অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন। গুলিস্তান-জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে পড়লে তারা আর এগোতে পারেননি। পরে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যায়। সেখান থেকে ছয়জন বঙ্গভবনে প্রবেশ করে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে শিক্ষার্থীরা টানা রাজপথ অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন ১ জুলাই থেকে। এই আন্দোলনের সূত্রপাত ২০১৮ সালে। ওই সময় আন্দোলনের মুখে সরকার নবম থেকে ত্রয়োদশ (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) গ্রেডের সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটাই বাতিল করে পরিপত্র জারি করে।

ওই পরিপত্রে সংক্ষুব্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে গত ৫ জুন রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের আদেশ দেন। সবশেষ রোববার (১৪ জুলাই) পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেন, কোটা পুনর্বহাল রেখে সরকার চাইলে পরিমাণ বা শতাংশ পরিবর্তন করতে পারবে।

রোববার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে রওয়ানা হন। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা জারি করেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে ফের শুনানি নেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ।

আদালতের রায় সত্ত্বেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছেন, তাদের দাবি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তারা কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে সংসদে আইন পাসের দাবি জানিয়ে আসছেন।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন টপ নিউজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর