আজ উলটো রথ, ঘরে ফিরছেন জগন্নাথ
১৫ জুলাই ২০২৪ ১৭:০১
ঢাকা: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রার সমাপ্তি হলো উলটো রথের মধ্য দিয়ে। আর এর মধ্য দিয়ে জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলরাম ঘরে ফিরল।
আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হওয়া রথযাত্রা সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে উল্টোরথের মাধ্যমে শেষ হয়। এদিন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উলটো রথযাত্রা শুরু হয়।
শোভাযাত্রায় তিনটি সুবিশাল অত্যাধুনিক ফোল্ডিং রথে দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক ভক্ত সংকীর্তন করে জগন্নাথ, বলদেব ও শুভদ্রা দেবীকে ঢাকার প্রধান রাজপথ প্রদক্ষিণ করে ইসকন স্বামীবাগ মন্দিরে নেওয়া হয়। সেখানেও দিনব্যাপী ভাগবত আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভজনকীর্তন ও মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমা রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
গত ৭ জুলাই আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশের উদ্যোগে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু রথযাত্রার মূল অনুষ্ঠান। এর মধ্য রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্বশান্তি ও মঙ্গলকামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলি কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
ওই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উদ্বোধনের পর রথ যাত্রা করে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হয়। টানা ৯ দিন চলার পর উলটো রথযাত্রা হয়। প্রথা রয়েছে, মাসির বাড়ি থেকে পোড়া পিঠে খেয়ে আবার রথে চড়ে বাড়ির পথে রওনা দেন জগন্নাথ দেব। এই যাত্রাকে বলা হয় উলটো রথ। সুসজ্জিত রথে বসিয়ে দেবতাদের রথ টানা হয়। রথের শীর্ষে থাকেন মাধবদের বিগ্রহ। তাকে বহন করা রথটি ভক্তরা টেনে নিয়ে যায়।
এর আগে দুপুর ১২টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘সকলে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে এটিই সম্প্রীতির এই বাংলাদেশের ঐতিহ্য।’
প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল হানিফ, বিশেষ অতিথি ছিলেন মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি শ্রী সুব্রত পাল, সহসভাপতি শ্রীবাসুদেব ধরসহ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতারা।
সারাবাংলা/একে