ডায়ালাইসিস রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বগুড়া মেডিকেল
১৭ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৮
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে কিডনি ডায়ালাইসিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়ালাইসিস রোগীর সংখ্যা।
রোগীর চাপ সামলে নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত আরেকটি শিফটে ডায়ালাইসিস বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। অপরদিকে চলতি বছরেই বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট ৫০ শয্যায় উন্নীত করা সম্পন্ন হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। এরইমধ্যে শেষ হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ততম হাসপাতাল বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৫শ’ শয্যার এই হাসপাতালে অনুমোদিত শয্যা ১২ শ’ হলেও রোগী ভর্তি থাকেন দেড় হাজারের বেশি। হাসপাতালের বারান্দা করিডোর সবস্থানেই রোগীর শয্যা। নেফ্রোলজি বিভাগের চিত্র ভিন্ন নয়। নেফ্রোলজি বিভাগ সূত্র জানায়, বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগ শুরু হয়েছিল হাতে গোনা সামান্য কয়েকটি শয্যা দিয়ে। এখন ৩২টি শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন রোগী থাকছে ৮০ থেকে ৮৫ জন। রোগী অনুযায়ী জনবল একেবারে অপ্রতুল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, কিডনি রোগী যেমন বাড়ছে তেমনি একইভাবে কিডনি ফেইলরের রোগী বাড়ায় চাপ এসে পড়েছে ডায়ালাইসিস ইউনিটের ওপর।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. আ ন ম এহসানুল করিম বলেন, ‘আমাদের ডায়ালাইসিস ইউনিটে মোট ২০টি মেশিন। দুই শিফটে প্রতিদিন ৪০ জন রোগীর ডায়ালাইসিস দেওয়া যায়। তবে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। ওয়ার্ডে ভর্তি ও সিরিয়ালে থাকা রোগীদের মধ্যে থেকে প্রতিদিন ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। বর্তমানে ৫ শতাধিক রোগী ডায়ালাইসিসের জন্য আবেদন করে অপেক্ষমাণ রয়েছেন।’
তিনি জানান, শুধু বগুড়া নয় আশেপাশের ৪/৫টি জেলার রোগীর চাপ সামলাতে হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে। এ জন্য ওই সব জেলা থেকেই কিডনি রোগীসহ ডায়ালাইসিস সেবা নিতে আসছেন।
নেফ্রোলজি বিভাগ সূত্র জানায়, হেমো ডায়ালাইসিসের জন্য আবেদন জমা রয়েছে ১ হাজার ৭২৮টি। এর বিপরীতে বর্তমানে ১ হাজার ২১৩ নম্বর সিরিয়ালের রোগী ডায়ালাইসিসের সুযোগ পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত ডায়ালাইসিসের জন্য আবেদন জমা পড়ায় অপেক্ষামাণদের তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ডায়ালাইসের আবেদনের সিরিয়াল নিয়ে নানামুখী সমস্যায় থাকলেও এ বিষয়ে কারো সুপারিশ গ্রহণ না করার নীতিতে সিরিয়াল অনুযায়ী ডায়ালাইসিস রোগীদের ডাকছেন।
হাসপাতালের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের পর ৬ তলায় নেফ্রোলজি বিভাগ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে ডায়ালাইসি সেন্টার আগের জায়গাতেই ৪র্থ তলায় রয়েছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, দ্রুত ডায়ালাইসিস ইউনিট সম্প্রসারিত অংশে স্থাপন করে আরেকটি শিফট বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, নতুন আরেকটি শিফট চালু হলে প্রতিদিন আরও ২০জন রোগীকে ডায়ালাইসিস দেওয়া সম্ভব হবে। এতে রোগীর চাপ কিছুটা কমবে।
এদিকে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ শয্যার ডায়ালাইসিস সেন্টারের কাজ এগিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন সম্পাসারিত অংশে ৬ষ্ঠ তলায় নেফ্রোলজি বিভাগে এটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চালু সম্ভব হবে। এরইমধ্যে এর সব ধরনের অবকাঠামো কাজ শেষ হয়েছে। সরঞ্জাম এসে পৌঁছালেই এর কাজ শুরু হবে। ‘মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সমুহে বিদ্যামান কিডনি ডায়ালাইসি সেন্টার ৫০ শয্যায় উন্নীত করণ’ প্রকল্পের আওতায় এটি স্থাপন হবে। এই প্রকল্পে দেশের ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থাকলেও বগুড়ার এই ৫০ শয্যা ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের কাজ সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে। ফলে শিগগিরই এটি চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/একে
কিডনি ডায়ালাইসিস রোগী বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল