Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রাজাকার স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুলাই ২০২৪ ২২:১১

ঢাকা: দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা নিজেদের ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন, তারা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ করছেন। এর পাশাপাশি যারা মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরের বীর শহিদদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

সোমবার (১৫ জুলাই) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ দাবি জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোনোভাবেই বাতিল নয়, বরং কোটাপদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রতি কোটাপদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী সমাজ। ২০১৮ সালে সরকারের কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। গত ৫ জুন হাইকোর্ট এই মর্মে নির্দেশনা দেয় যে, কোটাপদ্ধতি বাতিল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি লক্ষ করেছে যে, এই আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অপমান–অপদস্ত করছেন। শুধু তাই নয়, গতকাল রোববার ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের ‘রাজাকার’ দাবি করার যে উদগ্র বাসনার কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিলের যে দাবি আন্দোলনকারীরা তুলেছেন, তা নিঃসন্দেহে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ (৪) এবং ২৯ (৩) (ক) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে কোটাপদ্ধতি বহাল থাকতে হবে। বিশ্বের সব রাষ্ট্রেই সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে নাগরিক নানা সুযোগপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোটাপদ্ধতি চালু আছে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে কোটাব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সেখানে চার ধরনের নাগরিকদের জন্য মোট ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। নেপালের সংবিধানে দলিত, আদিবাসী, নারীসহ অন্যান্য নাগরিকের জন্য ৫৫ শতাংশ সাধারণ কোটা ও ৪৫ শতাংশ সংরক্ষিত কোটা চালু আছে। পাকিস্তানে সরকারি চাকরিতে ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ কোটা বিভিন্ন প্রদেশের জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নীতির আওতায় কেবল শিক্ষালাভ বা সরকারি চাকরিতেই নয়, বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেও কৃষ্ণবর্ণ, হিম্পানিক জাতি ও আদিবাসীদের জন্য কোটাব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে।’

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘যেকোনো সভ্য রাষ্ট্রে নাগরিকদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য কোটাব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে আন্দোলনকারীরা কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

বিবৃতিতে সই করেন শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শাহরিয়ার কবির, শফিক আহমেদ, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শামসুল হুদা, মমতাজউদ্দিন আহমেদ, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, হাশেম খান, রফিকুন নবী, মুনতাসীর মামুন, আরমা দত্ত, আবেদ খান, আবুল বারক আলভী, মাহফুজা খানম, আনোয়ারা সৈয়দ হক, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, আলমগীর সাত্তার, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফরিদা পারভীন, আতিউর রহমানসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

অপরাধ টপ নিউজ রাজাকার স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর