মঙ্গলবার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ
১৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪২
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। নতুন এই কর্মসূচিতে তারা আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছেন।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত এনে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থাকতে বহিরাগতরা কীভাবে হামলা করে? সরকার সহিংসভাবে এই আন্দোলনকে দমন করতে চাইছে।’
আরও পড়ুন-
- ‘রাজাকার স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ’
- থমথমে ঢাবি: বৈঠকে বসেছে প্রভোস্ট কমিটি
- সংঘর্ষ এবার ছড়াল ঢাবির শহীদুল্লাহ হল এলাকায়
- ঢাবিতে সংঘর্ষ, ঢাকা মেডিকেলে শতাধিক শিক্ষার্থী
- ধাওয়া-পালটা ধাওয়া শেষ, পিছু হটেছে কোটা আন্দোলনকারীরা
- শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে সারারাত হলে থাকবেন ঢাবি প্রাধ্যক্ষরা
- ঢাবির বিজয় একাত্তর হল রণক্ষেত্র, সংঘর্ষে ছাত্রলীগ-আন্দোলনকারীরা
- শহীদুল্লাহ হল ছাড়ছেন না আন্দোলনকারীরা, প্রক্টরের অনুরোধ উপেক্ষা
- ঢাবিতে জড়ো হচ্ছেন আন্দোলনকারীরা, এসেছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরাও
কর্মসূচি ঘোষণা করে এই সমন্বয়ক বলেন, আজকের (সোমবার) হামলা, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সারা দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে গণজমায়েত তৈরি করুন। আমাদের বৃহত্তর গণআন্দোলনের দিকে যেতে হবে।’
আন্দোলনে সবাইকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, এই আন্দোলন এখন আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। সরকারের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা করে এবং উসকানি দিয়ে এই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই সব মানুষকে এই আন্দোলনে নেমে আসতে হবে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) আমরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করব। এরপর আমরা সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করব।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কোটা আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অবমাননা করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আমাদের আজকের কর্মসূচি ছিল। আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং তার বক্তব্যের নিন্দা জানাই। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি দেশে ফিরে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক পথ দেখাবেন। তা না করে তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলে ইঙ্গিত করেছেন। এটি নিন্দনীয় এবং এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করা উচিত। একই সঙ্গে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়েও তিনি কটূক্তি করেছেন। আমরা ওই বক্তব্যেরও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এর আগে সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বিজয় একাত্তর হল থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর সেই সংঘর্ষ ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ঢাবির ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলসংলগ্ন এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল।
সবশেষ তথ্য বলছে, রাত ৯টার পর থেকে নতুন করে আর কোনো সংঘর্ষ হয়নি দুপক্ষের মধ্যে। এর মধ্যে ঢাবির প্রাধ্যক্ষ কমিটি বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাতে হলে হলে প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর
কর্মসূচি কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়