Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কক্সবাজারে আ.লীগ-জাসদ-জাপা কার্যালয় ভাঙচুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুলাই ২০২৪ ২০:৫২

কক্সবাজার শহরে জেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জাসদ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয় কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলনকারীদের মিছিল থেকে। ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল থেকে কক্সবাজারে জেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনও ভাঙচুর করা হয়েছে। কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করাসহ মারধর করা হয়েছে চার ছাত্রলীগ নেতাকেও।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিনভর কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংক রোড, কক্সবাজার সরকারি কলেজ, শহরের লালদিঘীর পাড়া ও ঝাউতলা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এসব এলাকায় কোটা সংস্কারের পক্ষে কয়েক শ শিক্ষার্থী মিছিল করেন।

বিজ্ঞাপন

হামলায় আহত কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বাজিবুল ইসলাম মোস্তাক এবং জেলা ছাত্রলীগ নেতা মঈন উদ্দিন, সাঈদ হোছেইন কাদেরী, ইউনুস উদ্দিন আকাশকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কিছু শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের পক্ষে মিছিল নিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংক রোডে অবস্থান নেন। সেখানে কোটা সংস্কারের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা সেখানে অনড় অবস্থানে ছিলেন। একপর্যায়ে সড়কে চলাচলকারী কয়েকটি যানবাহন তারা ভাঙচুর করেন।

প্রায় একই সময়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজ গেটে অবস্থান নিয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে লিংক রোড থেকে কক্সবাজার সরকারি কলেজের দিকে রওয়ানা হন। সরকারি কলেজের সামনে পৌঁছালে সেখানে ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এ সময় পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগ পিছু হটলেও আন্দোলনকারীরা কক্সবাজার সরকারি কলেজের গেটের স্থাপনা ও সেখানে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশের দুটি টিম আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর কিছুক্ষণ আন্দোলন বন্ধ থাকলেও দুপুর আড়াইটার পরে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা ফের লিংক রোডে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ পরে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। ঘণ্টা দুয়েক পরে বিকেল ৪টার দিকে শহরের ঝাউতলা এলাকায় কোটা সংস্কারের পক্ষে মিছিল দেখা যায়। মিছিল থেকে প্রধান সড়কে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে মিছিলটি থেকে শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা জাসদ ও জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়সহ আশপাশের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়। ওই সময় মারধর করা হয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের। পরে আন্দোলনকারীদের মিছিলটি কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গেলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে মিছিল নিয়ে শহরে নাশকতা চালানো হয়েছে। মিছিলে যারা অংশ নিয়েছে তারা শিক্ষার্থী না। তারা সবাই পরিকল্পিত হামলাকারী। এদের হাতে লাঠি, লোহার রড, ইটপাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এরা শহরজুড়ে ভাঙচুর চালিয়ে আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। দলীয় কার্যালয়ে থাকা কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজীবুল ইসলাম মোস্তাককে কুপিয়ে আহত করে। জেলা ছাত্রলীগ নেতা মঈন উদ্দিন, সাঈদ হোছেইন কাদেরীসহ কয়েকজনকে মারধর করে।

আহত চার ছাত্রলীগ নেতাকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের একজন মঈন উদ্দিন বলেন, এটা কোটা আন্দোলন ছিল না। শিবির ও ছাত্রদলের কিছু ছেলেরা এই হামলা, ভাঙচুর ও মারধর সংঘটিত করেছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. রকিবুজ্জামান বলেন, আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে কয়েকটি স্থানে ভাঙচুর ও কয়েকজনকে মারধর করেছে। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারা ভাঙচুর ও মারধর করেছে, তাদের ভিডিও-ছবি পাওয়া গেছে। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

আওয়ামী লীগ কার্যালয় কক্সবাজার কার্যালয় ভাঙচুর কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর