কোটা আন্দোলন— আদালতের ওপর আস্থা রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
১৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৫
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কেটাব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের ওপরই আস্থা রাখতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ছাত্র সমাজের প্রতি আমি সর্বোচ্চ আদালতের রায় হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষার জন্য অনুরোধ করব। আমার বিশ্বাস, ছাত্র সমাজ আদালত থেকে ন্যায় বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ দেশের বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে ছাত্র সমাজের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে) সব ধরনের কোটা প্রথা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে। পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোটা বহাল রাখার পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারের পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
সরকার আন্দোলনকারীদের সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ সময় ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে আবারও আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করেছে। বরং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করে। রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করে, সে ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের, তা আমার থেকে বেশি আর কে জানে!
যারা কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বলেন, আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা কখনোই কাম্য ছিল না।
কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের আদালতের রায়ের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ায় সমস্যা সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্র সমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায় বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না। ইনশাল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের মাতৃভূমিকে সবার সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
সারাবাংলা/টিআর
কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেখ হাসিনা