Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কমপ্লিট শাটডাউন: চট্টগ্রামে সড়কে যানবাহন কম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুলাই ২০২৪ ১৪:৩৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক দেখা গেছে। তবে গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল কিছুটা কম দেখা গেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নগরীর প্রবেশমুখ শাহ আমানত সেতু এলাকায় অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের একদফা সংঘর্ষ ছাড়া এ পর্যন্ত নগরীর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে যানবাহন চলাচল কম দেখা গেছে। তবে বেলা গড়াতে যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কেও যানবাহন তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। নগরী থেকে দূরপাল্লার যানবাহন কম ছাড়ছে বলে জানা গেছে।

সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মীরসরাই থেকে সীতাকুণ্ড হয়ে নগরীতে পৌঁছান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘মহাসড়কে আমি কোথাও পিকেটিং দেখিনি। কোথাও অবরোধকারীদের দেখাও পাইনি। চট্টগ্রাম অংশে মহাসড়ক স্বাভাবিক আছে। যানবাহন চলছে। আমার কাছে গাড়ি কম মনে হয়নি।’

কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির সংযোগ সড়ক-মহাসড়ক স্বাভাবিক আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাটহাজারীর বিষয়ে আমরা অ্যালার্ট আছি। সেখান থেকে এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। যানবাহন চলছে। কক্সবাজার মহাসড়কেও আমাদের অংশে কোনো সমস্যা নেই।’

চট্টগ্রাম নগরীতে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস যথানিয়মে চলছে। কল-কারখানা খোলা আছে। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা এবং পণ্যবাহী পরিবহনের আসা-যাওয়া স্বাভাবিক আছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সারাদেশে যে চলমান পরিস্থিতি তার প্রভাব চট্টগ্রাম বন্দরে পড়েনি। সব কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে। পণ্য উঠানো-নামানোর কাজও স্বাভাবিক। তিন হাজার টিইইউস কনটেইনারের শুল্কায়ন সমাপ্তের নথি জমা পড়েছে। সেগুলো ডেলিভারি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও ‘খুনের প্রতিবাদে’ এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এ সংক্রান্ত বার্তায় বলা হয়, শাটডাউন চলাকালে শুধুমাত্র হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোন প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোন গাড়ি চলবে না। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

তবে নগরী এবং জেলার কোথাও এ পর্যন্ত কোটা আন্দোলনকারীদের বড় কোনো জমায়েত বা পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র সকালে নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় প্রায় তিনশ’র মতো লোক জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। বিশ মিনিট পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকালে একদফা অবরোধের চেষ্টা ছাড়া নগরীতে আর কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোথাও অবরোধ আহ্বানকারীদের কোনো জমায়েতও আমরা দেখিনি। তাকে সকল পয়েন্টে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। যদি কোনো বিশেষ পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সকাল থেকেই নগরীতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। মহাসড়কে বিজিবি সদস্যরা সাঁজোয়া যানে করে টহল দিচ্ছেন বলে বিজিবির ব্যাটালিয়ন-৮ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী জানিয়েছেন।

সারাবাংলা ডটনেটের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান রাফি জানিয়েছেন, হল বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের অনেকেই চলে গেছেন। ক্যাম্পাসে এখন তেমন শিক্ষার্থী নেই। ক্যাম্পাসে এবং আশপাশের সড়কে কোনো বিক্ষোভ বা জমায়েত হয়নি। তবে অনেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

কমপ্লিট শাটডাউন কোটাবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রাম টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর