Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধান না হলে আন্দোলন শেষ হবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:২৮

ঢাকা: চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধান না হলে আন্দোলন শেষ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নানা ঘটনা প্রবাহের পর চলমান আন্দোলন সমাপ্তি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘না, এটা (আন্দোলন শেষ ) হয়নি, অতীতেও হয়নি। আপনি যদি অতীতের ইতিহাস দেখেন, পাকিস্তান আমলের ইতিহাস দেখেন সেখানেও দেখবেন বহুবার আন্দোলন এসেছে, আন্দোলন এক পর্যায়ে হয়ত স্তিমিত হয়েছে। তারপরে কিন্তু আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে। এবারকার আন্দোলন তো একটা ‘আইওপেনার’। এবারকার আন্দোলনে সমস্ত মানুষৃ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। আপনারা নিজেরাও অনেক রিপোর্ট করেছেন। এক বাচ্চা ছেলে ১৫/১৬ বছরের বয়স সে তার মায়ের কাছে বলে চলে এসেছে যে, আমি যাব, সাধারণ মানুষ বেরিয়ে এসেছে যে, না ওদের সঙ্গে আমাদের যেতে হবে।’

কারণ, আমার রুটি-রুজির ব্যাপার আছে। জিনিস পত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে আমরা কুলিয়ে উঠতে পারছি না। সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আজকে একদিকে কোটা আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ছিল, অন্যদিকে সরকারের চরম ব্যর্থতা সর্বক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, দূর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে। দূর্নীতি তারা নিজেরাই করে সব খানে তারা এতো ব্যর্থ হয়েছে যে, রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সেই কারণেই জনগণের পুঞ্জিভূত যে ক্ষোভ তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। হ্যাঁ, সাময়িকভাবে সেনা বাহিনী নামিয়ে, দমন-পীড়ন করে, নির্যাতন-নিপীড়ন করে, তারা এটাকে হয়ত থামিয়ে দিতে পারে। এটার যদি রাজনৈতিক সমধান না করে তাহলে কিন্তু কখনো এটার শেষ সমাধান হবে না।”

বিজ্ঞাপন

রাজনৈতিক সমাধানটা কী প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বক্তব্যের শুরুতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে কারফিউ দেওয়ার পর থেকে সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে একটা জিনিস প্রমাণ করতে চাইছে যে, আন্দোলন, বিভিন্ন হত্যার ঘটনা, ভাংচুর হয়েছে সব কিছুর জন্য দায়ী তারেক রহমান সাহেব। এটা প্রত্যেকটি কথার মধ্যে এটা আসছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, তারেক রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করা, তার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা এবং জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে বিএনপিকে দায়ী করা, বিরোধী দলকে দায়ী করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। সরকারের এসব বক্তব্য অমূলক, বিভ্রান্তিকর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’

‘এখান থেকে একটা জিনিস প্রমাণিত হয় যে, তারা জনগণের সমস্যা নিয়ে কথা বলছে না। তারা যখনই কথা বলছে তারা কিন্তু কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ হয়েছে সেই কথাগুলোই বলছে। এই আন্দোলনের শত শত প্রাণ কেড়ে নিলো সেই ব্যাপারে তারা (সরকার) কোনো কথা বলছে না। পুলিশের গুলিতে যে মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে সেটার ব্যাপারে কিছু বলছে না। আজকে বলছে যে, যদি কেউ আহত হয়ে থাকে তাহলে সেটাকে দেখে প্রয়োজনে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবে। অথচ এটা সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব সরকারের যদি এই ধরনের ঘটনায় যে কেউ আহত হোক না কেনো তার চিকিৎসার ব্যবস্থা সরকারকেই অবশ্যই করতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘তাদের মূল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে তারা গোটা আন্দোলনটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে ভিন্নভাবে চিহ্নিত করতে চায়। সেই আন্দোলনের মূল দাবিটা পাশ কাটাতে দেখবেন ছাত্রদের দাবি কিন্তু পুরন হয়নি। শিক্ষার্থীদের সাথে বসেনি, স্টেকহোল্ডারদের সাথে এটা নিয়ে কথাও বলেনি। তারা নিজেরাই আবার হাইকোর্ট যে সমস্যা তৈরি করেছে সেই কোর্ট দিয়ে রায়টা নিয়ে এসেছে। আপনাদের মনে থাকার কথা যখন সমস্যাটা শুরু হলো তখনই কিন্তু তারা বলতে শুরু করলো তখনই তাদের মন্ত্রীরা বললো যে এটা আদালতের বিষয় আদালতই সমাধান করবে। যখন পরে আরও বেশি বেগবান হয়েছে, আন্দোলন জোর করেছে তখন তারা বলতে শুরু করলো অপেক্ষা করো, আদালত থেকে সমাধান আসবে। অর্থাৎ সমস্যার সমাধানে যদি শিক্ষার্থীদের সাথে, স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলত, তাহলে আজকে এতো দূর পর্যন্ত গড়াতো না।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর