Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক, স্বস্তি ফিরেছে জনমনে

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট 
২৫ জুলাই ২০২৪ ০৯:৫৫

ঢাকা: প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করেছে বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সব পরিবহণই এদিন মহাসড়কে যাত্রী পরিবহণ করেছে। এদিন কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে মহাসড়কে নেমে আসে প্রায় সব ব্যানারের পরিবহণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরের উদ্দেশে বিভিন্ন পরিবহণ ছেড়ে গেছে। একইভাবে সেসব স্থান থেকে ঢাকায়ও ফিরে আসে বিভিন্ন পরিবহণ। প্রায় প্রতিটা বাস কাউন্টারেই দেখা গেছে যাত্রীদের উপস্থিতি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৪ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর ফকিরাপুল, আরামবাগ, টিকাটুলি, মানিকনগর-টিটি পাড়া, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ীর দিকে বিভিন্ন কাউন্টারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকাল ৯টার দিকে কুমিল্লার উদ্দেশে রাজধানীর কমলাপুর, আরামবাগ থেকে এশিয়া এয়ারকন, মিয়ামি এয়ারকন, রয়েল কোচের মতো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে পাশাপাশি তিশা প্লাস গাড়িও ছেড়ে যায়। একই সময় কুমিল্লা থেকেও গাড়ি ছেড়ে আসছে বলে জানান কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা।

এশিয়া এয়ারকন পরিবহণের ম্যানেজার মো. পারভেজ বলেন, মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সড়কে গাড়ি নামিয়েছি। যাত্রীর উপস্থিতিও ভালো। বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকায় মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা তার আগ পর্যন্ত মহাসড়কে সার্ভিস দিব।

আরামবাগ থেকেই লাল সবুজ পরিবহণের এসি ও নন এসি পরিবহণও চলাচল করতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি ফকিরাপুল থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে ছেড়ে গেছে হানিফ পরিবহণ, শ্যামলী পরিবহণ, এনা পরিবহণসহ অন্যান্য বাস সার্ভিসগুলোও।

সরেজমিনে রাজধানীর মানিকনগর-টিটি পাড়া এলাকায় দেখা গেছে, স্টার লাইন পরিবহণের বাস যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে ফেনীর উদ্দেশে। এর পাশাপাশি ড্রিমলাইন, হিমাচল, একুশেসহ অন্যান্য সব পরিবহণের গাড়িগুলোও মহাসড়কে এদিন যাত্রীদের নিয়ে ছেড়ে যায় বিভিন্ন গন্তব্যস্থলের দিকে।

এ ছাড়া, বুধবার সকাল থেকেই সায়দাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে গেছে। প্রায় একইরকমভাবে বিভিন্ন স্থান থেকে বাস ফিরেও আসছে। প্রায় একই রকমভাবে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক যাত্রীবাহী বাস বিভিন্ন গন্তব্যস্থলের দিকে যেতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সায়দাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সারাবাংলাকে বলেন, পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকেই এই টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস ছেড়ে যায়। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থান থেকে টার্মিনালেও গাড়ি এসেছে। মহাসড়কে নিরাপত্তা থাকার কারণে যাত্রীরাও খুশি আর দীর্ঘদিন পরে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাতে পেরে আমাদের চালক ও শ্রমিকরাও খুশি।

বুধবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে দেখা যায়, নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পরিবহণের বাস। একইসঙ্গে আব্দুল্লাহপুর, গাবতলি থেকেও বিভিন্ন গন্তব্যস্থলের দিকে যাত্রী নিয়ে যায় দূরপাল্লার নানা প্রতিষ্ঠানের বাস।

শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকা থেকেই না, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড এলাকাগুলো থেকেও বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিন দুপুরের পর থেকে ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কের ভবেরচর এলাকায় ছিল প্রচণ্ড জ্যাম। তবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়কে একটি লরি উলটে পড়ে যাওয়ার কারণেই এই জ্যাম সৃষ্টি হয়।

ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক ছিল বলে জানান যাত্রীরা।

জানতে চাইলে কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ইকবাল বাহার মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, কারফিউ শিথিল হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহনের অনেকটা স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে।

তিনি বলেন, কোথাও যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য কুমিল্লা জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাত্রী কিছুটা কম হলেও আশা করি বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) থেকে আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সারাবাংলাকে বলেন, আমরা মঙ্গলবারই জানিয়েছিলাম কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে আমরা সারাদেশে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৃহস্পতিবারও কারফিউয়ের সময় বাদ দিয়ে বাকিসময় বাস চালানো হবে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীর প্রবেশপথ বলে পরিচিত যাত্রাবাড়ী, হানিফ ফ্লাইওভার টোলপ্লাজা, শনিরআখড়া, রায়েরবাগসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পাশাপাশি দফায় দফায় চালানো হয় নাশকতা। পরবর্তীতে শুক্রবার (১৯ জুলাই) থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির পাশাপাশি কারফিউ জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় সশস্ত্র বাহিনী। বেসামরিক প্রশাসনকে এখনও সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রথম দিন দুই ঘণ্টা শিথিল করা হয় কারফিউ। পরদিন তিন ঘণ্টা শিথিল ছিল। তবে জেলাভেদে এই বিরতি কমবেশি হয়েছে।

ইতোমধ্যেই বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস চার ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে খোলা হয়েছে রফতানিমুখী বিভিন্ন পোশাক কারখানাও।

সারাবাংলা/এসবি/ইআ

কারফিউ নৌযান চলাচল মহাসড়কে যানচলাচল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর