‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হাইজ্যাক করে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র’
২৫ জুলাই ২০২৪ ২০:১২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন চট্টগ্রামের ১৪ দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলন হাইজ্যাক করেছিল স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এবং মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সুপরিকল্পিতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নজিরবিহীন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে এ চক্র। তাদের নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জোটটির নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে নগরীর দারুল ফজল মার্কেটে নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নেতারা এ সব কথা বলেন।
নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘২০১৮ সালেই সরকার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকুরিতে কোটা বাতিল করে। এবারও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সরকার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে রায় প্রকাশের আগেই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন হাইজ্যাক করে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে দেশকে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালায় চক্রটি।’
‘বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নজিরবিহীন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তাদের নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একাত্তরের ধ্বংসলীলার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সুন্দরভাবে কোটা সমস্যার সমাধান করেছে, সে জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র যাতে তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, ন্যাপের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য গাজী মো. আলমগীর কবির, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, গণআজাদী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম আশরাফী, ন্যাপের নগর সভাপতি বাপন দাশগুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ মজুমদার, চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ১৪ দলের নেতারা নগরীর মাঝিরঘাট, সদরঘাট, পাহাড়তলী ও অলঙ্কার এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
‘সরকারের ভেতর জামায়াত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করুন’
এদিকে ‘চট্টগ্রামে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম প্রতিরোধ আন্দোলন দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা সরকারের ভেতরে থেকে যারা জামায়াত-শিবিরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম-বৃহত্তর চট্টগ্রামের উদ্যোগে নগরীর লালদিঘীতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলনের ছত্রছায়ায় যেসব দুষ্কৃতিকারী সহিংসতা ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের উৎসবে মেতেছিল, তাদের কঠিন বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এমন ন্যাক্কারজনক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো একটি গণবিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তির পক্ষেই সম্ভব। জামায়াত-শিবির বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য বড়ো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের মধ্যে থেকে যারা অতি উদারনীতি গ্রহণ করে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তাদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সভাপতি আবদুল মালেক খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী, সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি সাইফুন নাহার খুশি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশেক মাহমুদ মামুন, সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন।
সারাবাংলা/আরডি/একে
কোটা আন্দোলন কোটা বিরোধী আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন জামায়াত বিএনপি শিবির