প্রতিটি হামলার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২৬ জুলাই ২০২৪ ১৬:১৩
ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাম্প্রতিক নাশকতার প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে। তবে প্রকৃত শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীদের কোনো হয়রানি করা হবে না।
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের পিএসকে এবং ঢাকায় পুলিশকে হত্যা করে তাদের লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে, চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবন ছাত্রলীগ কর্মীদের ফেলে দিয়েছে, মানুষ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে, বিটিভিতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ফুটেজ আমি নিজে দেখেছি, যারা এগুলো করেছে কেউ আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।’
শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের দুর্জয় শপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ সব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে নাশকতার পর অনেকের বিচার হয়েছে, কেউ কেউ আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে গেছে। এবার সেটি হবে না। প্রত্যেক হামলাকারীকে বিচারের আওতায় আনা হবে।’
‘রাষ্ট্রের ওপর হামলা বিএনপির তারেক রহমানের নির্দেশে হয়েছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘তারেক রহমানের ভয়েস সরকারের হাতে এসেছে। সে বলছে- বড়ো হামলা করলে বড়ো পদ, কারফিউ ভঙ্গ করো, না হলে পদ ছাড়ো। বিএনপির আরেক নেতা বলেছে – তোমরা আন্দোলনে ঢুকে যাও, নৈরাজ্য সৃষ্টি করো। ছাত্রলীগের কর্মী মারলে ৫ হাজার, পুলিশ মারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের স্বীকারোক্তি তারাই দিয়েছে। এটি কোন রাজনৈতিক দল? এটি একটি দেশবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন।’
সাম্প্রতিক নাশকতার চিত্র তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন স্থাপিত হয়েছে ১৯৬৪ সালে। কিন্তু গত ৬০ বছরে বিটিভিতে কখনো হামলা ভাঙচুর হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিটিভির কিছু কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু কখনো বিটিভিতে হামলা হয়নি। দুর্যোগকালে মানুষ যেখানে ছুটে যায়, সেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে ভাঙচুর চালিয়েছে তারা।
ঢাকাবাসী ও দেশবাসীর গর্ব মেট্রোরেলের স্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারের আইডি হ্যাক করে ভুল বার্তা পোস্ট করা হয়েছে।’
সরকারি চাকরিতে কোটা প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি, সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যা চেয়েছিল, তার থেকে বেশিই পেয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য ধরতো, তাহলে বিএনপি-জামাত এই সুযোগটা পেত না। এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সাধারণ কোনো শিক্ষার্থী মানুষ হত্যা বা জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তির ওপর হামলা চালাতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছেন, কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হবে না। কিন্তু তোমাদের ব্যবহার করে কেউ যেন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।’
বিশেষ অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, ‘যারা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে তারা দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী। সময় এসেছে, এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়তে হবে।’
সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এ সভায় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিমের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের পরিচালনায় সংসদ সদস্য আওলাদ হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সারাবাংলা/একে