‘গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে’
২৭ জুলাই ২০২৪ ২৩:২৩
ঢাকা: গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের আদালতে ওঠানোর আগেই নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রিমান্ড শেষে নুরুল হককে আদালতে নেওয়ার যে চিত্র গণমাধ্যমে এসেছে, তা যেকোনো বিবেকবান মানুষকে আলোড়িত করবে। এমন নির্যাতন করা হয়েছে যে তিনি দাঁড়াতেই পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের অন্যতম তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ ধরনের বর্বরোচিত কাজ পুরো সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে।’
রিমান্ডে ন্যূনতম আইন মানা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে কল্পকাহিনি রচনা করা হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেফতারের পাশাপাশি এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গুম করে নির্যাতন করে কীভাবে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা তাদের শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখলেই বোঝা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেছেন, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়নি। যদি তাই হয়, তাহলে জানালা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় শিশু সামির কীভাবে নিহত হলো? ছাত্রদের গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার পর এখন তাদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়া এবং সেখানে মায়াকান্না করা ও চিকিৎসায় সাহায্য করার কথা বলা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার আরেকটি দৃষ্টান্ত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিক সাঈদ খানকে ২৫ জুলাই গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। সাঈদ খান ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি। তিনি কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচার গণহত্যার খবর অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পরিবেশন করে আসছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকার গোয়েন্দা পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এরপর সাঈদ খানকে মেট্রোরেল পোড়ানোর বানোয়াট মামলায় জড়িয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকার কেবল বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদেরই নয়, তারা এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী কণ্ঠস্বরকে লক্ষ্য করেছে। তাই প্রতিবাদী সাংবাদিক, নির্ভীক লেখক ও গণতন্ত্রকামী বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের খেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
‘আমরা সরকারকে এই ভয়ংকর খেলা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারের মিথ্যা প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারকে বলব, সব হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে দেশ এবং দেশের মানুষকে অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম