নিহতদের পরিবার ও আহত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবে ডিএনসিসি
২৯ জুলাই ২০২৪ ২২:৩০
ঢাকা: সাম্প্রতিক সহিংসতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকার নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনোসামাজিক উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের সঙ্গে কাজ করবে তারা।
সোমবার (২৯ জুলাই) ডিএনসিসি’র সম্মেলনকক্ষে শিক্ষা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন। আলোচনায় ৩৬টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ১১৭টি কলেজের অধ্যক্ষ অংশ নেন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান।
আলোচনা শেষে গণমাধ্যমে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের সময় নিহত ও আহত ছাত্র, পুলিশদের প্রতি গভীর শোক ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুল, কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে মিটিং করছি। এটি প্রথম বৈঠক হলেও শেষ বৈঠক নয়। এমন আরও বৈঠক হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসা পর্যন্ত। আজকের আলোচনায় অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলোর সংক্ষিপ্তসার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।’
মেয়র বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের করণীয় নির্ধারণের উদ্দেশে এ বৈঠক। স্থানীয় সরকার হিসেবে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এগুলো পৌঁছে দেবেন।’
বৈঠকে শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুপারিশ আসে। সুপারিশগুলো তুলে ধরে মেয়র বলেন, ’ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী বিশেষ করে যারা নিহত ও আহত হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পাশে থাকা; শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা ও খেলাধুলার ব্যবস্থা করা; সরকারি চাকরি ছাড়াও বিকল্প কর্মসংস্থান আছে সেটি শিক্ষার্থীদের জানানো এবং উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া; ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা, আইনগত এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া; শিক্ষার্থীদের ট্রমা দূর করতে উদ্যোগ নেওয়া; কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তার কারণ অনুসন্ধান করা ও গবেষণা করে তথ্য উদঘাটন করা; শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্পর্ক বৃদ্ধি করা; শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ ও সরকারের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি করা; শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম বৃদ্ধি করা; পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া; শিক্ষার্থীদের প্রতি কঠোর বক্তব্য না দিয়ে তাদের প্রতি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণামূলক কথা ও বক্তব্য দেওয়া।
এ সময় মেয়র বলেন, ‘পুনরায় পাঠদান কীভাবে শুরু করা যায় বা অনলাইনে পাঠদান শুরু করা যায় কিনা সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেলিব্রেটি ও সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে প্রভাবিত করার বিষয়টিও উঠে আসে।’
এ সময় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে ধনী বাবা-মায়ের সন্তান মনে করা হয়। এটি একটি মিথ। কিন্তু সব শিক্ষার্থী ধনী বাবা-মায়ের সন্তান নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাস করে বের হয়ে নিজেরাই চাকরির ব্যবস্থা করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ও পরিবারকে স্বাবলম্বী করছেন। শিক্ষার্থীরা যেন বিভ্রান্ত না হয়। বিভ্রান্ত হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
সারাবাংলা/আরএফ/একে