২৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ডলার, কমেছে শেষ সপ্তাহে
২৯ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪৩
ঢাকা: জুলাই মাসের ১ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত ২৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে প্রথম তিন সপ্তাহে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫ কোটি ডলারের মতো। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জের ধরে ইন্টারনেট বন্ধের ধাক্কা রেমিট্যান্সে লেগেছে শেষ সপ্তাহে। আগের তিন সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে রেমিট্যান্স নেমে এসেছে প্রায় চার ভাগের এক ভাগে।
সোমবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় শেষ সপ্তাহে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে গেলেও চলতি সপ্তাহে এই প্রবাহ বাড়বে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, জুলাইয়ের প্রথম ২৭ দিনে দেশে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর মধ্যে প্রথম ১৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এরপর ১৪ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত সাত দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হিসাব বলছে, প্রথম দুই সপ্তাহে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৪৮ কোটি ডলার করে। তৃতীয় সপ্তাহেও তা ছিল ৪৫ কোটি ডলারের বেশি। কিন্তু ২১ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত এক সপ্তাহে রেমিট্যান্স নেমে এসেছে মাত্র ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে। আগের তিন সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে এ সপ্তাহে রেমিট্যান্স প্রায় চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।
এদিকে জুলাইয়ের প্রথম ২৭ দিনে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে— ৪০ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ডলার। ৮ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক।
সার্বিক হিসাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহের এই নেতিবাচক ধারার পেছনে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিকে দায়ী মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকার ১৮ জুলাই ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয় সারা দেশে। টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকে ১০ দিন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির একটা কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকা একটি বড় কারণ। এ ছাড়া শুক্র-শনি সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ছিল। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বাধা ছিল। আশা করছি ইন্টারনেট ফিরে আসায় রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়বে।
এর আগে গত জুন মাসেই দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। ২০২০ সালের জুলাইয়ে দেশে রেকর্ড ২৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর গত জুন মাসের ২৫৪ কোটি ডলারই এক মাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
সারাবাংলা/টিআর