চট্টগ্রাম জুড়ে লাগাতার বৃষ্টি, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি
১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় লাগাতার মাঝারি থেকে ভারী আকারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কর্মস্থলে যাবার পথে লোকজনকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। জলমগ্ন এলাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ভোরের দিকে টানা বর্ষণে রূপ নেয়। লাগাতার বৃষ্টি বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারি পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. আলী আকবর খান সারাবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে, সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬২ মিলিমিটার এবং ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
টানা বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, কাপাসগোলা, চকবাজার, বাকলিয়াসহ নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া নগরীর জিইসি মোড়, প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহরসহ আরও বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকায় নিচতলার বাসা, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর বিভিন্ন খাল, নালা-নর্দমা থেকে পানি উপচে ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার এলাকা মুরাদপুর, আতুরার ডিপোতেও পানি উঠে গেছে। ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য খাল-নালা দিয়ে পানি দ্রুত প্রবাহিত হতে পারছে না। এর ফলে অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। সিটি করপোরেশনের একাধিক টিম এলাকাগুলোতে গেছে। তারা যেখানে পানি আটকা পড়ছে, সেখানে বাধা অপসারণ করে প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। টিমগুলো ফিরলে টোটাল আপডেট জানা যাবে।’
নগরীর বাকলিয়া ভরাপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে বাসার সামনে পানি জমে আছে। মূল রাস্তায়ও পানি উঠে গেছে। রাস্তায় রিকশা, টেক্সিও নেই। বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি।’
নগরীর চকবাজার কে বি আমান আলী রোডের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল সারাবাংলাকে বলেন, ‘চকবাজার কাঁচাবাজারের পানি ছিল। রিকশায় করে কোনোমতে পার হয়েছি। জিইসির মোড় পর্যন্ত গিয়ে আবার আটকে যায়। সেখানে হাঁটুর ওপরে পানি। অনেক কষ্ট করে অফিসে পৌঁছেছি।’
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হওয়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টা মাঝারি থেকে ভারি কিংবা অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের জন্য তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নদীবন্দরের জন্য এক নম্বর নৌ সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
এদিকে ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় পাহাড়ধসের সম্ভাবনা আছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ