মোবাইল নেটওয়ার্কে বন্ধ ফেসবুক-টেলিগ্রাম
২ আগস্ট ২০২৪ ১৪:১৮
ঢাকা: মোবাইল নেটওয়ার্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টেলিগ্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ১২টার পর মোবাইল নেটওয়ার্কে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোর ক্যাশ বন্ধ করা হয়। পাশাপাশি বন্ধ করা হয় টেলিগ্রামও।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা শুরু হলে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ ছিল। তবে ৩১ জুলাই দুপুর ২টার পর থেকে মোবাইল গ্রাহকেরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারছিলেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ থাকার ১০ দিন বন্ধ ছিল মোবাইল ইন্টারনেট।
রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের জাতীয় ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের (এমটব) সঙ্গে বৈঠক করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে মোবাইল ইন্টারনেট চালুর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
মোবাইল ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি মোবাইল ফোন গ্রাহকরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ দিন মেয়াদী ৫ জিবি ইন্টারনেট পাবেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-টিকটকসহ বেশ কয়েকটি অ্যাপ ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। মোবাইল ইন্টারনেট চালুর তিন দিনের মাথায় সেগুলো সচল করা হয়।
মোবাইল ইন্টারনেট চালুর আগে ৩১ জুলাই ফেসবুকের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করে বিটিসিএল। ইউটিউব ইমেইলে ব্যাখ্যা দেয় এবং টিকটকের প্রতিনিধি সেদিন হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন।
এমটবের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খাজা টাওয়ারসহ মহাখালীতে তিনটি ডাটা সেন্টার রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে একটিতে (ত্রাণ পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিচতলায়) সন্ত্রাসীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। চারদিকে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ওই এলাকায় থাকা অন্য দুটি ডাটা সেন্টারের কর্মীরাও শাটডাউন করতে বাধ্য হন।’
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, ‘১৭ ও ১৮ জুলাই নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু কিছু এলাকায় আমরা সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু ১৮ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালানো হয়। সেসময় মহাখালীর ত্রাণ পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিচতলায় একটি ডাটা সেন্টার সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, সেখানে বেশকিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। যারা এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এরই মধ্যে তথ্য সংগ্রহও করেছে।’
মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর পাঁচদিন আগে ২৩ জুলাই রাতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কুটনীতিক পাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, ফ্রিল্যান্সিং ও প্রযুক্তি এবং রফতানিমুখী খাত ওয়াইফাই সেবা পায়। তবে মোবাইল নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড লাইনেও ফেসবুক, মেসেঞ্জারসহ কিছু মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা যাচ্ছিল না।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই প্রথমে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে এবং দেশজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে পরদিন রাতে সারা দেশের মোবাইল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়।
এর কারণ হিসেবে আইসিটি মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সহিংসতার কারণে ফাইবার কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সারাবাংলা/একে